আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে আজ, ফের হামলার হুমকি ইসরাইলের

যুদ্ধবিরতি শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রয়োজনে মার্কিন সমর্থনে গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার অঙ্গীকার করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধে আরও আগ্রাসী হয়ে ফিরে আসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

শনিবার সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন বক্তৃতায় এই হুঁশিয়ারি দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ব্যর্থ হলে হামাসের বিরুদ্ধে ফের যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত তার দেশ।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিরতি একটি সাময়িক ব্যবস্থা এবং তাদের অভিযান এখনো শেষ হয়নি। তিনি আরও জানান, গাজার ওপর হামলা চালানোর অধিকার ইসরাইলের রয়েছে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রেসিডেন্ট, বিদায়ী জো বাইডেন ও নবনির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প, উভয়েই এটি সমর্থন করবেন।

রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টা) এই চুক্তি কার্যকর হবে বলে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের সামান্য যা কিছু অবশিষ্ট রয়েছে, তা গুছিয়ে নিয়ে নিজেদের পুরোনো বসতবাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ফের যুদ্ধের হুমকি দিলেন।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি।হামাস বর্তমানে ‘সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ’। এই বক্তৃতার আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘জিম্মিদের মধ্যে কাদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে, হামাসের সেই তালিকা আমাদের হাতে না আসা পর্যন্ত ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি করবে না। চুক্তির লঙ্ঘন সহ্য করবে না ইসরায়েল।’

তিনি বলেন, এটি স্বল্পস্থায়ী। প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনে আরও আগ্রাসী রূপে গাজায় হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে ইসরাইল।

নেতানিয়াহু জানান, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান নেতাদের হত্যার পর গাজার প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে। এ কারণেই হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে একমত হয়েছে।

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ১৫ মাসের সংঘর্ষের পর, ১৮ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানানো হয়। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ৪২ দিন স্থায়ী হবে, যা স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কার্যকর হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ইসরাইল প্রায় ১ হাজার ৮৯০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। মিসর যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শিগগিরই শুরু হবে, যার লক্ষ্য স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা। তবে শর্তগুলি এখনও স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এই ধাপে আরও জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার সঙ্গে আরও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরাইলে ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, এবং এদের মধ্যে এখনও ৯৪ জন গাজায় আটক রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছেন। ১৫ মাসের এই যুদ্ধের কারণে ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

 

জেএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ইসরাইলে