আন্তর্জাতিক

ক্ষমতা ছাড়ার শেষ মুহূর্তে নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটালেন বাইডেন

বায়ান্ন আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জো বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেন ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব ছাড়ার শেষ মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন ক্ষমতা দেখালেন জো বাইডেন। ডোনাল্ড ট্রাস্পের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যসহ রেকর্ডসংখ্যক ব্যক্তিকে আগাম ক্ষমা করে গেছেন। নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন, এমন শঙ্কা থেকে প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতাবলে বাইডেন এই কাজ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে আর কোনো প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহূর্তে এত বেশিসংখ্যক ব্যক্তিকে এভাবে ক্ষমা করার নজির নেই। বাইডেনের এই ভূমিকার সমালোচনা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

জো বাইডেনের দুই ভাই জেমস ও ফ্রাঙ্ক বাইডেন, বোন ভ্যালেরি বাইডেন এবং তাঁদের স্বামী ও স্ত্রীরা ক্ষমা পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন। এ তালিকায় আরও আছেন রিপাবলিকান পার্টির কংগ্রেস সদস্য লিজ চেনি, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের সাবেক চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি এবং হোয়াইট হাউসের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফাউচিসহ আরও অনেকে।

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাস্প হেরে যাওয়ার পর ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি  তার সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালানোর পাশাপাশি ভাঙচুর করে। ওই হামলার ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেশনাল সিলেক্ট কমিটির সব আইনপ্রণেতাও রয়েছেন বাইডেনের ক্ষমা পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায়। রিপাবলিকান পার্টির কংগ্রেস সদস্য লিজ চেনিও এই কমিটিতে ছিলেন। ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  এসব ব্যক্তিদের ক্ষমা প্রসঙ্গে বিদায় বেলা এক বিবৃতি  দিয়ে গেছেন জো বাইডেন। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন,  ‘আমার পরিবার অবিরাম হামলা ও হুমকির মুখে রয়েছে। এসব হামলা ও হুমকি মূলত আমাকে আঘাত করার লক্ষ্যে, যা জঘন্য রকমের দলীয় রাজনীতির প্রকাশ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই যে এসব আক্রমণ শেষ হবে।’

ক্ষমতা ছাড়ার শেষ মুহূর্তে বাইডেনের নিজ পরিবারের একাধিক সদস্যকে ক্ষমা করার বিষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। বাইডেন কেন ক্ষমা ঘোষণা করলেন- এনিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।  এ বিষয়ে  বাইডেনের  একটি ঘনিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্প এরই মধ্যে বাইডেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ‘বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে’ একজন বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে বাইডেন কিছুটা আতঙ্কিত ছিলেন।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়ে  বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওই বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি কোনো অন্যায় করেননি এবং শেষ পর্যন্ত দায়মুক্তি পাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হলে তাঁরা আর্থিক ও মানসম্মানের দিক থেকে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।’

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে দেশটির প্রেসিডেন্টকে কেন্দ্রীয় অপরাধের জন্য ক্ষমা করার বিপুল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদেরই প্রেসিডেন্ট ক্ষমা করেন। তবে বিচারের মুখোমুখো হননি এমন ব্যক্তিকেও দেশটির প্রেসিডেন্ট চাইলে ক্ষমা করতে পারেন।

 এদিকে, শেষ মুহূর্তে পরিবারের সদস্যসহ রেকর্ডসংখ্যক ব্যক্তিকে আগাম ক্ষমা করে দেওয়ার ঘটনায় বাইডেনের সমালোচনা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এনবিসি রিপোর্টার ক্রিস্টেন ওয়েলকার দাবি করেছেন, তাঁকে এক খুদে বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, ‘এটা অবমাননাকর। (যাঁদের ক্ষমা করা হয়েছে) তাঁদের অনেকে বড় অপরাধ করেছেন।’

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বাইডেন