ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট ২০২৫- এ যোগ দিতে দুবাই পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১১টায় তিনি সেখানে পৌঁছান বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী আহমেদ বেলহৌল আল ফালাসি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দুবাইয়ে স্বাগত জানান।
ড. আহমেদ বেলহৌল আল ফালাসি ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান এবং গত এক দশক ধরে দুবাইয়ে হয়ে আসা আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত সমাদৃত এই সম্মেলনের বিষয়ে অবহিত করেন।
উভয় নেতা দুই দেশের মধ্যে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতা বিনিময়সহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ এবং ঢাকায় নিযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী খাসেফ আল হামৌদি উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক ফ্লাইটটি বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
দুদিনের সংক্ষিপ্ত সফর শেষে আগামী শুক্রবার তিনি দেশে ফিরবেন।
গেলো রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে, প্রধান উপদেষ্টা বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন।’
পাবলিক ডিপ্লোমেসি উইংয়ের মহাপরিচালক আলম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময়, প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে সৌজন্য বৈঠক করবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।’
আলম জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম গত ১৩ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টাকে শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান। এর জবাবে, প্রধান উপদেষ্টা তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন।
২০১৩ সালে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব সরকার শীর্ষ সম্মেলন সরকারি অভিজ্ঞতা এবং উদ্ভাবন বিনিময়ের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
গত দশক ধরে, এটি একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে সহায়তা করার জন্য ১৪০ টিরও বেশি দেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, নীতিনির্ধারক, চিন্তাবিদ এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
আলম বলেন, এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন সরকার ও জনগণের মধ্যে সংযোগ জোরদার করার জন্য বৈশ্বিক সংলাপ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের মধ্যে কার্যকর অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে।
বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে,যা অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সাধারণ রাজনৈতিক স্বার্থের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি প্রবাসী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করেন, যারা রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। এ ছাড়াও বস্ত্র, কৃষি পণ্য ও জ্বালানির মতো খাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে।
জেএইচ