স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে হওয়া বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এক পর্যায়ে তাকে হোয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই ঘটনার জন্য তিনি ক্ষমা চাইবেন না।
তবে পরিস্থিতি যখন ইউক্রেনের প্রতিকূলে, তখন জেলেনস্কি পাশে যাচ্ছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে। তারা ইউক্রেনের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের যে সমস্ত দেশের বন্ধুত্ব রয়েছে, মূলত তারাই জেলেনস্কিকে সমর্থন করেছেন। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মসনদে বসার পর থেকেই মিত্র দেশগুলো আতঙ্কিত রয়েছে। তাদের ধারণা, জেলেনস্কিকে চাপে রেখে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকেই জয়ী ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্পের।
ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়ে ইউরোপের দেশগুলো যা বললেন-
জার্মানি:
ট্রাম্প-জেলেনস্কি সংঘাতের পর জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, ‘ইউক্রেনের মানুষ শান্তি চায়। শান্তি কত জরুরি, তা তাদের চেয়ে বেশি কেউ জানেন না। সেই কারণেই আমরা সকলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির দাবি করে আসছি। জার্মানি এবং ইউরোপের উপর ভরসা রাখতে পারে ইউক্রেন।’
ফ্রান্স:
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখো পর্তুগালের বলেন, ‘রাশিয়া আগ্রাসী, ইউক্রেনের মানুষ সেই আগ্রাসনের শিকার। আমরা তিন বছর আগেও ইউক্রেনকে সাহায্য করতে এবং রাশিয়ার উপর বিধিনিষেধ চাপাতে সম্মত হয়েছিলাম। এখনও তা-ই করতে চাই। ইউক্রেন নিজের সম্মানের জন্য, স্বাধীনতার জন্য, ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য এই যুদ্ধ করছে।’
ইতালি:
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, ‘পশ্চিমি শক্তির মধ্যে যেকোনো ভেদাভেদ আমাদের আরও দুর্বল করে তোলে। আমেরিকা, ইউরোপের মধ্যে অবিলম্বে আলোচনা প্রয়োজন।’
ডেনমার্ক:
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেছেন, ‘বন্ধুদের মধ্যে আলোচনার রাস্তা খোলা রাখতে হবে। কিন্তু সেটা এভাবে প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে হলে একজনই জিতে যান। আর তিনি (পুতিন) ক্রেমলিনে বসে আছেন।’
ইউরোপীয় কমিশন:
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, ‘ইউক্রেনের মানুষের সাহসকে সম্মান জানাই। কঠোর হোন, সাহসী হোন, ভয় পাবেন না। প্রেসিডেন্ট, আপনি একা নন। আমরা শান্তির জন্য আপনার পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাব।’
মলডোভা:
মলডোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া স্যান্ডু বলেন, ‘সত্যিটা খুব সহজ। রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করেছিল। রাশিয়াই এখানে আগ্রাসী। ইউক্রেন নিজেদের স্বাধীনতার জন্য লড়ছে। আমরা সকলে ইউক্রেনের পাশে আছি।’
স্পেন:
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যাঞ্চেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘ইউক্রেন, স্পেন তোমার পাশে আছে।’
নেদারল্যান্ডস:
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস ইউক্রেনকেই সমর্থন করে। আমরা স্থায়ী শান্তি চাই। যে আগ্রাসন রাশিয়া শুরু করেছে, ইউক্রেনের মানুষের জন্য, ইউরোপের মানুষের জন্য আমরা সেই আগ্রাসনের ইতি চাই।’
পোল্যান্ড:
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘জেলেনস্কি, ইউক্রেনের বন্ধুগণ, আপনারা একা নন।’
চেক প্রজাতন্ত্র:
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পিটার প্যাভেল লিখেছেন, ‘আমরা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াচ্ছি। সময় এসেছে, ইউরোপের কিছু করে দেখানো উচিত।’
সূত্র: রয়টার্স, ইউরো নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান, পিপল
এমএ//