লম্বা ছুটিতে ঈদ পরবর্তী ভ্রমণ পিপাসুদের আগমনে মুখরিত সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। রমজানের দীর্ঘ নিরবতা কাটিয়ে এখন যেনো বিরামহীন ভাবে চলছে হোটেল থেকে চায়ের দোকান এর ব্যাস্ততা। কেউ এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউবা এসেছে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) ছুটির শেষ দিনেও পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র সাগরকন্যা কুয়াকাটায় সমাগম ঘটেছে বিপুল পর্যটকের।
আগত পর্যটকরা সৈকতের জিরো পয়েন্টে হইহুল্লোরে মেতেছেন। অনেকে সমুদ্রের নোনা জলে সাতার কেটে, অনেকে সমুদ্রের বালিয়াড়িতে ফুলবল নিয়ে, অনেকে আবার মেতেছেন জলকেলিতে। শিশু পর্যটকরা মেতেছেন বালু খেলায়। এছাড়া অনেকে আবার স্পিড বোট, ওয়াটারবাইক, ঘোড়া এবং মোটরসাইকেলে ঘুরে দেখছেন সৈকতের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। অনেকে আবার সৈকতের কিটকটে বসে উপভোগ করছেন সমুদ্রের ঢেউ সহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
আগতদের ভীড়ে বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার আড়াই শতাধিক হোটেল মোটেল। পর্যটকদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে পুলিশ সদস্যরা।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক দম্পত্তি মোঃ রুমিন ও নার্গিস বলেন, আমরা পরিবারবর্গ সহ কুয়াকাটায় আরো এসেছি তবে এবার এসে হোটেলে রুম পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে তারপরও ভালোই লাগল।এখানকার পরিবেশ খুব ভালো, পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। পদ্মা সেতুর সুফল উপভোগ করছি আমরা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত এই মহাসড়কটি ফোরলেন হলে আরো অনেক পর্যটক বাড়বে।
সি-বাইক ও ট্রলার ব্যবসায়ী মো: জাকারিয়া বলেন, ঈদের লম্বা ছুটিকে কেন্দ্র করে ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই পর্যটক বেড়েছে। তবে আজকে কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল নেমেছে। সকল ব্যবসায়ীর মুখে হাসি ফুটেছে।
সাউথ-বিচ হোটেলের স্বত্বাধিকারী মো: সোহেল মিয়া জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে এ বছর পর্যটন মৌসুমে এখানে তেমন পর্যটক আসেনি।পর্যটনের সকল ব্যবসায়ী লসে ছিলো। ঈদের পর থেকে প্রচুর পর্যটক আসছে, বৃহস্পতি শুক্র ও শনিবার সব হোটেল বুকিং রয়েছে এবং সৈকতে পর্যটকের ঢল।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার এসোসিয়েশন সভাপতি মো: মোতাবেক শরীফ বলেন, শুক্রবার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকে সবচেয়ে বেশি আগমন ঘটেছিলো। তবে আজকে ও পর্যটকের ঢল। আমাদের ছোট-বড় মিলে আড়াই শতাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে, তার মধ্যে ৮০ ভাগ হোটেলে ১০০% রুম বুকিং রয়েছে। পর্যটকে নিরাপত্বায় উপজেলা প্রশাসন সহ আমরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত। পর্যটকের আগমনে পর্যটনের সকল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে। তার ধারণা ঈদের পঞ্চম দিনেই দশ লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায় এটাই ছিল এইবছরের সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের আগমগ, আজ থেকে কমতে শুরু করেছে ছুটি শেষ সবাই ছুটছেন নিজ কর্মসংস্থানে
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনচার্জ শাখাওয়াত হোসেন তপু জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত আছি। তাদেরকে মাইকিং করে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন পর্যটন স্পট গুলোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ট্যুরিস্ট পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং করা হবে।
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মো: ইয়ামিন সাদেক বলেন, এ বছর লম্বা ছুটির কারনে ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটবে। এটা বুঝতে পেরে আগেই পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। আজকে এ বছরের শ্রেষ্ঠ পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় মহিপুর থানা পুলিশ, কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ, কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও কুয়াকাটা পৌরসভার পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক নজরদারি রয়েছে।
আই/এ