বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এখানকার জনগণই- এমন মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তবে এসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নির্ভর করছে দেশের জনগণের ওপর।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস।
এদিনের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের সাম্প্রতিক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ এবং বিভিন্ন দোকান ও ব্র্যান্ডে হামলার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি উগ্র ইসলামপন্থি সন্ত্রাসবাদের আশঙ্কাজনক বৃদ্ধির বিষয়ে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এও এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়, ড. ইউনূস সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থার উত্থান ঘটেছে। প্রতিবাদকারীরা প্রকাশ্যে ওসামা বিন লাদেনের ছবি প্রদর্শন করছে, এমনকি নাৎসি প্রতীক—যেমন ঢাকার একটি ছবিতে দেখা গেছে, তাও প্রকাশ্যে তুলে ধরা হচ্ছে। এছাড়া মার্কিন ব্র্যান্ড যেমন কেএফসি ও কোকাকোলাকে লক্ষ্য করে ইহুদিবিরোধী (অ্যান্টিসেমিটিক) প্রচার চালানো হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা বা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা এসব উত্তেজনা উসকে দিচ্ছেন।
জবাবে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, আমি আপনার বক্তব্য শুনেছি এবং আপনার উদ্বেগের প্রশংসা করি। বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং দেশটির কিছু বিশেষ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই দেশ নিয়ে আমরা আগেও বহুবার আলোচনা করেছি, বিশেষ করে এখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের মাধ্যমে।
এদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিয়েও কথা বলেছেন ট্যামি ব্রুস।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই, তা হলো- ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাংলাদেশের আদালতের তরফ থেকে জারি করা হয়েছে। অবশ্যই, এই সমস্ত বিষয় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষেরই বিষয় এবং অবশ্যই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আলোচনা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এখানকার জনগণের ওপর। তারা বর্তমানে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি—এ কথা বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি একে কোনোভাবেই তুচ্ছ বলতে চাই না- এটি নিঃসন্দেহে বাস্তবতা।
ট্যামি ব্রুস আরও বলেন, গণতন্ত্র একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনগণের কার্যক্রমই নির্ধারণ করবে, তারা কীভাবে বর্তমান সংকট ও সমস্যার মোকাবিলা করবে। তিনি বলেন, গত দুই-তিন দশক ধরে আমরা দেখেছি- ভুল সিদ্ধান্ত কীভাবে মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই এখন অনেক দেশের সামনে স্পষ্ট একটি পথ খোলা রয়েছে- তারা কোন বিকল্পটি বেছে নেবে, সেটাই মূল বিষয়।
এসি//