দেশজুড়ে

মরেন নাই প্রমাণ করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সেলিম

জীবিত মানুষকে জুলাই আন্দোলনে শহীদ দেখিয়ে মিথ্যা মামলা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সোলায়মান সেলিম। সুস্থ সবল জীবন যাপন করছেন। অথচ জুলাই মাসে সংঘটিত আন্দোলনে তাকে শহীদ দেখিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তার ঠিকানায় ওই হত্যা মামলার তদন্তে গেলে বিষয়টি তিনি জানতে পারেন।

গেল বছরের ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় এই মামলা করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর কাজলা এলাকায় ৩ আগস্ট সেলিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অথচ সেলিম তখন ময়মনসিংহের ধামর বেলতলি বাজারে নিজের মুদি দোকান চালাচ্ছিলেন।

মামলার বাদী সেলিমের আপন বড় ভাই গোলাম মোস্তফা। স্বাক্ষী সেলিমের অপর দুই ভাই হেলাল উদ্দিন ও আবুল হোসেন।  প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। এছাড়া ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান কামাল, শামীম ওসমানসহ ৪১ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও দেড়শ থেকে দুশজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে সেলিমের বাবা আব্দুল হাকিম মারা যান। তার থেকে জমি নিয়ে চার ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃস্টি হয়।  সেলিমের কোনো ছেলেসন্তান না থাকায়, তাঁর সহায়-সম্পত্তির ওপর নজড় পড়ে তার তিন ভাইয়ের। সেলিম ধারণা করছেন, তার ভাইয়েরা সুযোগ পেলেই তাকে মেরে তার জমি-জমা আত্নসাত করতো। সেলিমের স্ত্রী হাজেরা খাতুন জানিয়েছেন, সেলিমকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এই নাটক সাজিয়েছে তার তিন ভাই। আগেও তারা সেলিমের ওপর হামলা করেছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় বেঁচেছেন। এই অবস্থায় নিরাপত্তহীণতায় ভূগছেন সেলিম। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও  করেছেন তিনি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সেলিম বলেন, তিনি মরেন নাই, তা প্রমাণ করতে পাঁচবার যাত্রাবাড়ী থানা এবং ডিবি অফিসে গিয়েছেন। মামলাটি তদন্ত করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী জোনের এসআই আমিনুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, তার কাছে তদন্তের দায়িত্ব আসার আগে আরো দুজন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। একারনেই এমন ভিত্তিহীন মামলা কীভাবে নেওয়া হলো, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারছেন না।

তিনি আরো জানান বাদী গোলাম মোস্তফা পালিয়েছে। তার মোবাইল ফোন বন্ধ, কোথায় আছে, সেটাও জানা যাচ্ছে না। আদালতের নির্দেশে সেলিম ও তার ভাইদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।

সেলিমের অপর দুই ভাই হেলাল উদ্দিন ও আবুল হোসেন। মামলায় তাদের নাম সাক্ষী হিসেবে আছে। কিন্ত তারা মামলার ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে দাবী করছেন।  

এই পরিবারে দীর্ঘদিনের বিরোধের সাক্ষী স্থানীয় একজন  রুহুল আমিন। তিনি বলছেন, ছেলেসন্তান না থাকায় সেলিমের ভাইয়েরা জমি আগেভাগেই পেতে চায়। কিন্তু একজন জীবিত মানুষকে মৃতদেখিয়ে মামলা করা চরম পর্যায়ের ষড়যন্ত্র।

 

 আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #জীবিত #শহীদ