গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সভাপতি বিচারপতি (অব.) মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, কমিশন ইতোমধ্যে গুম সংক্রান্ত দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। সেখানে ২৫৩ জন গুমভুক্ত ভিকটিমের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যাদের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য—(১) নিখোঁজ হওয়ার সময়ের প্রমাণ রয়েছে, (২) ফেরার সময় নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং (৩) জীবিত ফিরে আসার পর গোপন বন্দিশালার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম বলেন, ‘গুমের ঘটনায় র্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই-এর কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন—এগুলো এমন প্রতিষ্ঠান, যেখানে সেনা সদস্যরাই মূলত নেতৃত্বে থাকেন। আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব সংস্থার মাধ্যমে অনেক গুম সংঘটিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী জড়িত ছিল না, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যে জানতেন না, এমনটা বলা যাবে না।’
গুমকে একটি ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, গুমভুক্ত ব্যক্তিদের বেশিরভাগকেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার দেখানো হয়, অনেকে ফেরত আসেননি এবং অনেক ব্যক্তিকে ভারতের সীমান্ত এলাকায় তুলে দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা ভাগ্যক্রমে মামলা ছাড়াই মুক্তি পেয়েছেন।
কমিশন বলছে, গুমের শিকার ব্যক্তিরা চার ধরনের পরিণতির সম্মুখীন হন— গোপনে হত্যা; বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে সন্ত্রাসী তকমায় হাজির; ভারতে পাঠিয়ে গ্রেফতার দেখানো এবং ভাগ্যক্রমে ছাড়া পাওয়া।
সবশেষ প্রতিবেদনে এমন ১২ জন নিখোঁজ ব্যক্তির বিষয়ে অগ্রগতি প্রকাশ করা হয়েছে, যারা এখনও ফেরত আসেননি কিন্তু যাদের গুমের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের দায়ী করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে দুইটি সুপারিশ করা হয়েছে: প্রথমত, সন্ত্রাসবিরোধী মামলার অপব্যবহার দ্রুত বন্ধ করা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং দ্বিতীয়ত বর্তমানে প্রচলিত কৌশলের পরিবর্তে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার মডেল অনুসরণ করে নতুন কাউন্টার টেরোরিজম কৌশল বাস্তবায়ন।
আই/এ