জুলাই অভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। সোমবার (৩০ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ এই অভিযোগ দাখিল করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর, পুলিশ সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় চারজন আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন—পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী আকাশ।
প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম জানান, গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে রংপুরের পার্ক মোড়ে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন নিরস্ত্র, দৃঢ়চেতা সমন্বয়ক। বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাকে দুই ব্যক্তি গুলি করেন। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সম্প্রতি তারা ৩০ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণসহ তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে জমা দেয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র প্রস্তুত করে তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথমবারের মতো বিচারাধীন একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আগামী শুনানিতে অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
উল্লেখ্য, আবু সাঈদ ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম মুখ হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশজুড়ে গণআন্দোলনের জন্ম হয়, যার ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগে বাধ্য হন।
এসি//