ভারতের হিমাচল প্রদেশে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা ও ভয়াবহ ভূমিধস। রাজ্যের মান্ডি জেলায় রাতের আঁধারে ধসে পড়া পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের তিনজন। তবে এই ট্র্যাজেডির ভেতরেও অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেছে মাত্র ১১ মাস বয়সী এক শিশুকন্যা। ভূমিধসের সময় শিশুটি গভীর ঘুমে ছিল। সকালে উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর একা শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পান।
সোমবার (০৭ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে গত সপ্তাহে রাত প্রায় ১টার দিকে। প্রবল বর্ষণের কারণে রামেশ কুমার, তার স্ত্রী রাধা দেবী ও মা পুনম দেবী বাড়ির ভেতরে পানি ঢোকার বিষয়টি সামাল দিতে বাইরে বের হয়েছিলেন। তখনই হঠাৎ ভূমিধস নামে এবং তিনজনই ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে মারা যান।
পরে পাহাড়ের নিচে থাকা ওই বাড়িতে ছুটে আসেন আশপাশের প্রতিবেশীরা। রাত প্রায় ২টার দিকে তারা এসে দেখতে পান কেবল শিশুটি বেঁচে আছে, সে একা ঘরের ভেতর ঘুমাচ্ছে।
শিশুটির চাচা জানান, গত কয়েকদিনে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে, পরিবার সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, আমরাই ওকে মানুষ করব, কাউকে দেব না।
হিমাচল রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এসডিএমএ জানায়, ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগে হিমাচল প্রদেশে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা ও প্রবল বৃষ্টিতে মারা গেছেন ৫০ জন; আর ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে দুর্যোগজনিত সড়ক দুর্ঘটনায়।
এ ছাড়া রাজ্যজুড়ে এখন পর্যন্ত ২৩টি আকস্মিক বন্যা, ১৯টি ক্লাউডবার্স্ট এবং ১৬টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মান্ডি জেলা, সেখানে ১৫৬টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর রাজ্যের ১০টি জেলায় আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করেছে।
এসি//