প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিও লেটার দিয়ে দুদকের তদন্ত থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে সম্প্রতি একটি পত্রিকায় যে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে সে বিষয়টি সত্য নয়। মূলত সেই ডিও লেটার দিয়ে দুদকের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ লাইসেন্সকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী মাফিয়াদের রোষানলে পড়েছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘আমরা পরিবর্তন আনছি, যারা এতদিন অনিয়ম-দুর্নীতি করেছে, তাদের স্বার্থে তা আঘাত এনেছে৷ বিটিসিএলের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ২৯০ কোটি টাকার এলসি করা হয়। কিন্তু কিছু বিশেষ কোম্পানি বিটিসিএলকে এই মার্কেট থেকে সরিয়ে দিতে চায়। তাই আমি দুদককে অনুরোধ করে একটি চিঠি লিখেছিলাম’।
তিনি দাবি করেন, ‘এটাকে অপব্যাখ্যা করে রিপোর্ট হয়েছে। আমি বা আমার মন্ত্রণালয়কে যেভাবে দায়ী করা হচ্ছে তার নিন্দা জানাই। নতুন বাজেটে কোনও প্রকল্প তোলা হয়নি। কারণ, আমরা চলমান প্রজেক্টে বাস্তবায়ন করতে চাই’।
তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে আইটিইউ (আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন) এবং জিএসএমএ (মোবাইল অপারেটরদের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম) একটা সহজ লাইসেন্সিং ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশের সরকারকে ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে চাপ দিচ্ছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সেটা করেনি। যেহেতু বর্তমান সরকারের সংস্কারের মন মানসিকতা আছে, সেজন্য বিষয়টাতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
বিগত সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সাতটি আইজিডব্লিউ অপারেটর আইওএফ নামে একটি কার্টেল গঠন করে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, তৎকালীন সময়ে বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আইওএফকে বৈধতা দিতে আইওএফের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু রাখে, যা প্রায় ১২ বছর ব্যাপী পরীক্ষামূলকই ছিলো।
তিনি আরও বলেন, মোবাইল অপারেটরদেরকে সরাসরি আন্তর্জাতিক কল আনতে নিষিদ্ধ করা হয়, যেখানে আইওএফগুলো প্রতি মিনিটে ০.০৩ ডলারে কল টার্মিনেট করলেও রাজস্ব ঘোষণা করতো মাত্র ০.০০৬ ডলার। ২০২৪ সাল নাগাদ প্রকৃত টার্মিনেশন রেট ০.০০১ ডলারে নেমে এলেও আইওএফগুলো প্রতি মিনিটে মাত্র ০.০০০৪ ডলারই ঘোষণা করতে থাকে। এই ব্যবধান গত ১২ বছরে সরকারের ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়েছে। এ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির পুরোটাই সালমান এফ রহমান গংদের পকেটে ঢুকেছে।
আই/এ