দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না বলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে এ সিদ্ধান্তে জাতীয় সনদে কোনো দল চাইলে নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারবে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ১৭তম দিনের আলোচনার শুরুতে এ কথা জানান কমিশনের সহ সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না বলে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। কিছু দল এ বিষয়ে ভিন্নমত ব্যক্ত করেছে। ওইসব দল ও জোট জাতীয় সনদে নোট অব ডিসেন্ট (প্রস্তাবের বিপক্ষে দলীয়ভাবে দ্বিমত) দিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অনুরোধ যারা নোট অব ডিসেন্ট দিতে উৎসাহী, যদি আপনারা প্রয়োজন মনে করেন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। এটা আমাদের অনুরোধ। কিন্তু আমরা অতীত যেভাবে নোট অব ডিসেন্টের কথা বলা আছে, সেভাবে জাতীয় সনদে তারা নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারবে। এটা সিদ্ধান্ত হিসেবে আপনাদের জানালাম’।
প্রস্তাবটি নিয়ে একাধিক দিন সংলাপ আলোচনা হয়। সেখানে বিএনপিসহ তার সমমনা দল এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং আম জনতার দল একই ব্যক্তিকে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা করার পক্ষে মত দেয়।
তবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ বাকি দল দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী করার বিপক্ষে মত দেন।
এর আগে উত্তরার বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান গতকাল (সোমবার) বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এই ট্র্যাজেডিকে ঘিরে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে আলোচনা শুরুর আগে একটি শোক প্রস্তাব পাঠ করা হয়। শোক প্রস্তাবটি পাঠ করেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।
এতে বলা হয়, সোমবার (২১ জুলাই) বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করছি। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী শিশুসহ সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত পরিবারদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, আহতদের সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা বিধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শোক প্রস্তাবটিতে বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে যথাযথ তদন্ত এবং এই ধরনের দুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।
এই শোক প্রস্তাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ আলোচনায় অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এবং কমিশনের সদস্যরা সই করেন।
আই/এ