একটা সময় ছিল যখন পর্দা আলো করলেই দর্শকদের দৃষ্টি আটকে যেত দুই মুখে দেব আর শুভশ্রী। তাদের হাসি, চোখের ভাষা, পর্দার প্রেমে যেন লুকিয়ে থাকত একধরনের মায়াবী যাদু। ২০০৯ সালে ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়ে যাত্রা শুরু করে এই জুটি হয়ে উঠেছিল বাংলা রোমান্টিক সিনেমার প্রতীক। তাদের সিনেমাগুলো ছিল শুধুই গল্প নয় এক প্রজন্মের অনুভূতি, কৈশোর কিংবা তারুণ্যের স্মৃতি।
‘রোমিও’র প্রেম, ‘খোকাবাবু’র দুষ্টু মিষ্টি স্নেহ, কিংবা ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’র অস্ফুট কষ্ট সবই ছিল একধরনের ভালোবাসা, যা পর্দা পেরিয়ে এসে জায়গা করে নিয়েছিল হৃদয়ে। সিনেমা তখন কেবল বিনোদন ছিল না ছিল ব্যক্তিগত, গভীর, একান্ত কিছু অনুভব। কিন্তু সময় তো থেমে থাকে না। একসময় সেই উজ্জ্বলতার মাঝে নামে নীরবতা। সম্পর্ক ফিকে হয়, হাসিমুখগুলো আড়ালে সরে যায়। আর ঠিক সেই সময়েই থেমে যায় ‘ধূমকেতু’ এক অসমাপ্ত গল্প, যার শুটিং শেষ হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু মুক্তি পায় না বছরের পর বছর। কারণ ছিল না গল্পের বরং, ছিল বাস্তব জীবনের টানাপড়েন।
অথচ সিনেমা কি থেমে থাকে? ক্ল্যাপবোর্ড, স্ক্রিপ্ট, ক্যামেরা সবকিছুই যেন নীরবে অপেক্ষায় ছিল তাদের ফেরার। আর আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সেই অপেক্ষার অবসান ঘটাল ‘ধূমকেতু’র মুক্তি দিয়ে। দর্শকদের জন্য ফিরে এলেন দেব ও শুভশ্রী একসঙ্গে আবারও।
তবে সিনেমা হলে ফেরার আগেই ঘটেছে আরও এক অন্যরকম পরিবর্তন। গেল বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালবেলায় দেব ও শুভশ্রীকে একসঙ্গে দেখা গেল নৈহাটির বড়মার মন্দিরে। যেখানে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন তাদের আর একসঙ্গে দেখা যাবে না। কিন্তু সেখানে তারা পাশাপাশি বসে পূজা দিলেন। মায়ের আরাধনায় মগ্ন হলেন, লালের রঙে ছিল নিঃশব্দ সমঝোতা। দেবের পাঞ্জাবি আর শুভশ্রীর শাড়িতে এক অদ্ভুত মেলবন্ধন। ভক্তদের চোখে জল, মুখে হাসি এমন এক দৃশ্য, যা কেবল সিনেমায় নয়, বাস্তব জীবনেও বিরল। যেখানে সব থেমে গিয়েছিল ঠিক সেখান থেকেই যেন আবার শুরু হলো নতুন করে।
এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ভিডিও। দেব নিজ হাতে শুভশ্রীকে গাড়িতে তুললেন, পাশে বসলেন নিজেও। কারও ক্যাপশন, "ভালোবাসা ফিরে না এলেও সম্মান ফিরে এসেছে", আবার কেউ লিখল, "এমন সম্মিলনেই বাংলা সিনেমা বড় হয়ে ওঠে।"
এসকে//