অর্থনীতি

বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় বাংলাদেশ

খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। গেল চার বছর ধরে বিশ্বব্যাংকের এই লাল তালিকা থেকে বের হতে পারছে না বাংলাদেশ। ২০২১ সালের জুন থেকে গেল জুলাই পর্যন্ত অর্থাৎ সোয়া ৪ বছর ধরে সংস্থাটির লাল তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্বব্যাংক খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার নির্ধারণে একটি নির্দিষ্ট সূচক ব্যবহার করে। এই সূচকের অধীনে, যেসব দেশের খাদ্যপণ্যের দাম প্রতি মাসে গড়ে ৫ শতাংশ বা তার বেশি বাড়ে, তারা লাল তালিকায় চলে যায়। আর ৫ শতাংশের নিচে নামলেই ওই দেশ লাল তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে। সর্বশেষ ২০২১ সালের মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৪.৮৭ শতাংশ, কিন্তু এরপর থেকে এই হার ৫ শতাংশের উপরে রয়েছে।

বিশ্বব্যাংক পর্যবেক্ষণ করে বলেছে, গেল রমজান মাসের পর কিছু পণ্যের দাম কমলেও, বর্তমানে আবারও বেশিরভাগ খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত চাল, ডিম, সবজি, মুরগির দাম আরও বেড়েছে। এর ফলে, আশঙ্কা করা হচ্ছে যে বাংলাদেশ শিগগিরই লাল তালিকা থেকে বের হতে পারবে না।

বিশ্বব্যাংক খাদ্য মূল্যস্ফীতির জন্য তিনটি রঙের তালিকা ব্যবহার করে, সবুজ তালিকা যেখানে মাসিক মূল্যবৃদ্ধি ২ শতাংশের কম। হলুদ তালিকা যেখানে মাসিক মূল্যবৃদ্ধি ২ থেকে ৫ শতাংশ এবং লাল তালিকা যেখানে মাসিক মূল্যবৃদ্ধি ৫ থেকে ৩০ শতাংশ।

বাংলাদেশ অতীতে কিছু সময় সবুজ ও হলুদ তালিকায় ছিল, তবে বেশিরভাগ সময় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের উপরে থাকায় এটি লাল তালিকায় স্থান পেয়েছে। 

২০০৮-০৯ অর্থবছরে ০.২৫ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ সবুজ তালিকায় ছিল, ২০১১-১২ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২.৫৭ ও ৪.২৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে হলুদ তালিকায় ছিল।

বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব কাটিয়ে অনেক দেশই লাল তালিকা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে, তবে বাংলাদেশ এখনও সেই অবস্থানে থাকতে পারছে না। 

করোনাভাইরাসের পর থেকে, এবং ২০২২ সালে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গভীর প্রতিক্রিয়া ফেলেছে, যার কারণে মূল্যস্ফীতি কমানোর গতি খুব ধীর। চলতি বছরের জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৭.৫৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু একই সঙ্গে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে ৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে।

এছাড়া, বিশ্বব্যাংক আরও জানিয়েছে যে, যেসব দেশের খাদ্যপণ্যের দাম ৩০ শতাংশ বা তার বেশি বাড়ে, তাদেরকে পিঙ্গল (কালচে লাল বা তামাটে রঙের) তালিকায় রাখা হয়, যা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। 

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #খাদ্য মূল্যস্ফীতি #বিশ্বব্যাংক #লাল তালিকা #বিশ্ব ব্যাংকের লাল তালিক