ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলের বর্বর হামলায় গেল ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন ত্রাণের খোঁজে থাকা সাধারণ মানুষ। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, খাদ্য সংকট ও অপুষ্টিতে একই দিনে আরও চারজন প্রাণ হারিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলি হামলায় উত্তর গাজার বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজা সিটির একটি আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় অন্তত আটজন এবং তুফাহ এলাকায় আরও দুজন নিহত হন।
সাম্প্রতিক সময়ে গাজা সিটিতে ইসরাইলের অভিযান আরও তীব্র হয়েছে। দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শহরটি দখলের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা বাস্তবায়িত হলে বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ গাজায় সরতে বাধ্য করা হতে পারে। এই পরিকল্পনা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে, এমনকি কিছু ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তাও এর বিরোধিতা করছেন।
বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইসরাইল তাদের শহর ছেড়ে দক্ষিণে যেতে বললেও, অনেকের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
বেইত লাহিয়া থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে গাজা সিটিতে আশ্রয় নেওয়া ওয়ালা সুবহ বলেন, ‘আমাদের কোনো আয়ের পথ নেই। যদি সরতে হয়, অন্তত আশ্রয় বা তাঁবুর ব্যবস্থা করে দিক, বিশেষ করে বিধবা, শিশু ও অসুস্থদের জন্য।’
আরেক বাসিন্দা, উম সাজেদ হামদান, জানান তিনি এই নির্দেশ মানবেন না। ‘আমি পাঁচ সন্তানের মা, স্বামী জেলে। সন্তানদের নিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালানো সম্ভব নয়। আল-মাওয়াসিতে যাওয়ার চেয়ে গাজা সিটিতেই মৃত্যু মেনে নেব,’ বলেন তিনি।
আল জাজিরার রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা এই দখল পরিকল্পনাকে ‘গুরুতর উসকানি’ বলে অভিহিত করেন। দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমাসরির মতে, এ হামলা মানবিক সংকট আরও গভীর করবে এবং ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর কৌশলের অংশ হতে পারে।
এমএ//
