বিভুরঞ্জন সরকারের মা, প্রায় ৯৫ বছর বয়সী মাধবীলতা সরকার এখনও জানেন না যে তার সন্তান আর বেঁচে নেই।
জানা গেছে, শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাত থেকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা শহরের নগরকুমারী (উত্তরপাড়া) এলাকায় বিভুরঞ্জন সরকারের গ্রামের বাড়িতে স্বজন ও প্রতিবেশীদের আনাগোনা লক্ষ্য করেছিলেন তার মা। আর বারবার জানতে চাচ্ছিলেন, তারা কেন এসেছেন বাড়িতে।
স্বজনেরা বেড়াতে এসেছেন বলা হলেও তখনো তাকে জানানো হয়নি ছেলের মৃত্যুর ঘটনা।
বোদা উপজেলার এই বাড়িতে বিভুরঞ্জন সরকারের মায়ের সঙ্গে তার ছোট তিন ভাই, তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা এবং আগে মারা যাওয়া বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও সন্তানরা বাস করেন।
বিভুরঞ্জন সরকারের ছোট ভাই ও বোদা প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মনোরঞ্জন সরকার বলেন, ‘মা বয়সে প্রবীণ ও অসুস্থ। তাই দাদার মৃত্যুর খবর এখনও তাকে জানানো হয়নি। তবে বাড়িতে আসা লোকজন দেখে মা বারবার জানতে চাচ্ছেন, তারা কেন এসেছেন। আমরা পরিকল্পনা করছি, শনিবার লাশ আনার আগে মাকে বিষয়টি জানাব।’
উল্লেখ্য, ৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকায় জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই দিন রাতেই রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বলাকির চর এলাকায় মেঘনা নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে কলাগাছিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন। পরে সন্ধ্যায় মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
কলাগাছিয়া নৌ-পুলিশ সদস্যরা মরদেহের ছবি তুলে রমনা থানায় পাঠান। পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া বিভুরঞ্জন সরকারের ছবির সঙ্গে মিল পাওয়ায় পুলিশ তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়। এরপর বিভুরঞ্জন সরকারের ছেলে ঋত সরকার ও তার ভাই চিররঞ্জন সরকার মুন্সীগঞ্জে এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।
এসি//