রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় এক মায়ের হাতে প্রাণ গেল মাত্র পাঁচ মাস বয়সী কন্যাশিশুর।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামে ঘটে মর্মান্তিক এ ঘটনা। নিহত নবজাতক বাবুলাল ও তুলসী রানী দম্পতির দ্বিতীয় কন্যা সন্তান।
স্থানীয়দের উদ্ধৃত্তি দিয়ে পুলিশ জানায়, শিশুটি কান্না করায় সকালে দাদি পাতানী রানী তাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য মা তুলসী রানীর হাতে তুলে দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর মেয়েকে নিয়ে ঘরে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করেন তুলসী রানী।
পরে শিশুটির রক্তাক্ত দেহ স্বামী বাবুলালের হাতে তুলে দেন তিনি। এ সময় শ্বাশুড়ি পাতানী রানী চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘাতক মাকে আটক করে রাখেন।
শিশুটির বাবা হোটেল শ্রমিক বাবু লাল বলেন, কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। মাসখানেক ধরে বউ অসুস্থ জন্যে বাচ্চাটা আমার মায়ের কাছে থাকত ৷ আজ ভোরে দুধ খাওয়ার জন্য কান্না করছিল। এজন্য ওর মার কাছে দেয়। মেয়েটার কান্না থামল, কিন্তু এভাবে থামবে ভাবিনি কোনোদিন।
শ্বাশুড়ি পাতানী রানী বলেন, ৫-৬ দিন ধরে নাতনী আমার কাছেই ছিল। সকালে কান্না করছিল, তাই বউকে দেই দুধ খাওয়াতে। কিছুক্ষণ পর দেখি ছেলে হাতে করে গলাকাটা বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। বউ শুধু চুপ করে আছে।
এদিকে ঘটনার পর আটক তুলসি রানী গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিকতা ভারসাম্যহীন অবস্থার কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন প্রতিবেশীদের অনেকে।
তুলসি রানীর ভাই মানিক মিয়া অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, আমার বোন সন্তানদের খুব ভালোবাসে। কিন্তু অসুস্থ থাকলে মানুষ স্বাভাবিক থাকে না। সুস্থ থাকলে এ কাজ কোনোদিন করত না।
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সবিত্রী সেন বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। শুনেছি নিহত শিশুর মা মানসিক রোগে ভুগছেন।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক জানান, হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত মাকে আটক করা হয়েছে। তিনি পুলিশের কাছে শিশু হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এসি//