গ্রেটাকে নিয়ে ইসরাইলের সিদ্ধান্ত

সুইডেনের পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ১৫৬ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠাচ্ছে ইসরাইল। শনিবার (০৪ অক্টোবর) ইসরাইলের টেলিভিশন চ্যানেল আই ২৪ নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চ্যানেলটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লোটিলায় অংশ নেয়া গ্রিসের নাগরিকদের এবং গ্রেটাসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে একটি বিশেষ বিমানে গ্রিসে ফেরত পাঠানো হবে।

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার জন্য খাদ্য ও ওষুধ বহন করে ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। এই অভিযানে মোট ৪৩টি নৌযান অংশগ্রহণ করেছিল। মিশনের আয়োজন করেছে চারটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা—ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা। এই চার সংস্থার যৌথ উদ্যোগে গঠিত হয়েছিল ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি), যা পুরো মিশনের মূল উদ্যোক্তা ছিল।

সুইডেনের নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক ছিলেন সেই মিশনে। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।

গত বুধবার রাতে প্রথমে ১৩টি নৌযান আটকায় ইসরাইলের নৌবাহিনী; কিন্তু তারপরও বাকি ৩০টি নৌযান গাজার উদ্দেশে এগিয়ে যাচ্ছিল। এই ৩০টি জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল পোল্যান্ডের নৌযান ম্যারিনেত্তি।

পরের দিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একে একে সেই নৌযান আটক করে ইসরাইলের নৌ সেনারা। আটক নৌযানগুলো এবং অভিযাত্রীদের ইসরাইলে আশদোদ বন্দরে রাখা হয়েছে।

আটক অভিযাত্রীদের মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গও আছেন। আই ২৪-এর প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযাত্রীদের মধ্যে কয়েক জনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাকিদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আটক অবস্থায় ইসরাইলে সুইডেনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়েছিল গ্রেটা-কে। কর্মকর্তাদের তিনি জানিয়েছেন যে তাকে ছারপোকায় পরিপূর্ণ একটি কারকক্ষে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি দেয়া হচ্ছে না।

এমনকি তাকে জোর করে ইসরাইলি পতাকাকে চুমু দেওয়া, সেই পতকা ধরে ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গ্রেটা।

অভিযাত্রী দলের অন্যতম সদস্য ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো ডি’ আগুস্টিনো গার্ডিয়ানকে বলেছেন, “আমাদের সবার সামনেই গ্রেটাকে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে, ইসরাইলের পতাকাকে চুমু খেতে এবং পতাকা গায়ে জড়িয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।”

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

এসি//