আর্কাইভ থেকে জাতীয়

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ৮ বছরেও হয়নি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ৮ বছরেও হয়নি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল। দেশের ইতিহাসে কঠিন এক ট্র্যাজেডি ঘটেছিল সেদিন। সাভারে ধসে পড়েছিল বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা নিয়ে গড়ে ওঠা ভবন রানা প্লাজা। 

এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন। আহত হন আরও প্রায় দেড় হাজার মানুষ। যারা প্রাণে বেঁচে গেছেন তারা পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।  আজ ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল সেই ভয়াল রানা প্লাজা ধস ট্র্যাজেডির ৮ বছর। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় এ পর্যন্ত ভবনের মালিক সোহেল রানা, তার পরিবার, সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়রসহ বিভিন্ন জনের নামে পাঁচটি মামলা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে একটি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) একটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিনটি মামলা দায়ের করে।

মামলায় অভিযুক্ত ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন কেবল ভবনের মালিক সোহেল রানা। বাকি আসামিদের মধ্যে জামিনে আছেন ৩২ জন, পলাতক ছয়জন এবং মারা গেছেন দুইজন।

সম্পদের হিসাব দাখিল না করা সংক্রান্ত নন সাবমিশন মামলায় রানার তিন বছর কারাদণ্ড হয়েছে ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট। এ মামলায় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার মা মর্জিনা বেগমের ছয় বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তার ছয় কোটি ৬৭ লাখ ৬৬ হাজার ৯৯০ টাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেন আদালত। এছাড়া ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের আরেকটি মামলা চলমান আছে।
দুদকের মামলায় বিচার হলেও ভবন ধসের ঘটনায় মূল মামলার বিচারে অগ্রগতি নেই। এ ঘটনায় হওয়া দুটি মামলাতেই পাঁচ বছর আগে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। তবে উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশের কারণে এ মামলায় দীর্ঘ এ সময়েও কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। 

সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে নাগরিক জীবন থেকে হারিয়ে যায় অনেক ঘটনা। সেই ধারায় রানা প্লাজা ধসের ঘটনাও আজ অনেকটাই বিলীন। প্রতি বছর সেই ভয়াল দিনটিতে ঘটনার কথা স্মরণ করলেও, স্মরণ করা হয় না সেই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের।  বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে করোনা মহামারিতে অনেকেই অমানবিক জীবন কাটাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এই ৮ বছরেও যথাযথ ক্ষতিপূরণ পায়নি, অনেকেরই হয়নি কর্মসংস্থান। যাদের অবহেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তাদেরও শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। ভবন ধসের ঘটনার পর থেকে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সারাদেশে শ্রমিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করলেও। রোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত বছর এবং এই বছর সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন রানা | প্লাজা | ট্র্যাজেডি | | ৮ | বছরেও | হয়নি | মামলার | সাক্ষ্যগ্রহণ