আর্কাইভ থেকে করোনা ভাইরাস

বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব দিলো ভারত

বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব দিলো ভারত

আশঙ্কাজনক হারে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আগে নিজেদের দেশের ভ্যাকসিনের চাহিদা মেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। যে কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি থাকা সত্ত্বেও সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত করোনা ভ্যাকসিনের সঠিক সাপ্লাই দিতে পারছে না দেশটি। এই বিষয়টি সমাধানের জন্য এবার যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশেই করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছে দিল্লি। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ দিতে না পারায় এবার যৌথ উদ্যোগে ‘কোভ্যাক্সিন’ উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। 

শনিবার (২৪ এপ্রিল) ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি ‘নোট ভারবাল’ (কূটনৈতিক বার্তা) পাঠানো হয়েছে। 

জানা গেছে, নোট ভারবালে বাংলাদেশ সরকারকে ভারত বলেছে, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য খ্যাতনামা টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বাড়িয়ে চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহের বাধ্যবাধকতা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বার্তায় ভারত জানিয়েছে, গত বছর থেকে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিরাপদ ও সহজলভ্য টিকা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বাংলাদেশের জনগণের টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া এর প্রতিফলন। এর পাশাপাশি আইসিডিডিআরবি ও ভারত বায়োটেক গত বছরের ডিসেম্বর মাসে কোভ্যাক্সিনের ফেজ থ্রির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চুক্তি করেছিল। তবে সেই ট্রায়াল শুরুর অনুমোদন এখনও পাওয়া যায়নি। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডের তুলনায় কোভ্যাক্সিন বেশি কার্যকর, প্রায় ৮০ শতাংশ।

ভারত আরও বলেছে, আমাদের সক্ষমতা বাড়িয়ে ও বেশ কয়েকটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে যদি কোভ্যাক্সিনের যৌথ উৎপাদন শুরু হতো, তবে আমাদের দেশে ও অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ (বাংলাদেশে তৈরি) ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যেত। এতে প্রত্যেক বাংলাদেশি গর্বিত হতো। তবে সেই সুযোগ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এখনও আমাদের সেই সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করার পথ খোলা আছে।

কোভ্যাক্সিন ভারতীয় বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনার টিকা। ভারতে এই টিকার ‘ফেজ থ্রি ট্রায়াল’ চলছে। গত বুধবার ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) বলেছে, এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্সিন কভিডের বিরুদ্ধে ৭৮ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

গত বছর কোভ্যাক্সিন উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার শুরুতেই ভারত বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেয়ার এবং যৌথ উৎপাদনের বিষয়েও আলোচনা করেছিল। কিন্তু অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) অনুমোদন পাওয়ায় বাংলাদেশ ওই ভ্যাকসিন আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল। 

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশ যেহেতু এখন ডাব্লিউএইচওর অনুমোদিত নয় এমন চীনা ও রুশ টিকা আমদানি ও উৎপাদনের পথে এগোচ্ছে, এই সময়ে কয়েক মাস ধরে ঝুলে থাকা ভারতের কোভ্যাক্সিন নিয়ে প্রস্তাবটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত ‘নোট ভারবাল’ পাঠানোর মধ্য দিয়ে ওই উদ্যোগ আরও চাঙ্গা হয়েছে।

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বাংলাদেশেই | টিকা | উৎপাদনের | প্রস্তাব | দিলো | ভারত