অক্সিজেনের পর এবার করোনা রোগীদের চিকিৎসায় রেমডেসিভিরের ইঞ্জেকশনের সংকট নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ভর্ৎসনা করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার ভারত সরকারকে উদ্দেশ করে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিংহ মন্তব্য করেন, দেখে মনে হচ্ছে আপনারা চান মানুষ মারা যাক।
ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দিল্লিসহ ভারতের অনেক শহরে রেমডেসিভিরের ইঞ্জেকশনের সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে গেল ২৩ এপ্রিল রেমডেসিভির ইঞ্জেকশনের ব্যবহারবিধিতে রদবদল আনে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এখন শুধু মাঝারি থেকে চরম সংকটজনক করোনা রোগীর ক্ষেত্রে এই ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা যাবে। আর যেসব রোগী বাড়িতে আছে এবং যাদের অক্সিজেন প্রয়োজন নেই তাদের রেমডেসিভিরের ইঞ্জেকশন না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি সমস্যায় পড়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিল্লির এক আইনজীবী। তার অভিযোগ, ভারত সরকারের নতুন বিধিনিষেধের ফলে তার ছয়টি ইঞ্জেকশন দরকার হলেও মাত্র তিনটি পেয়েছেন তিনি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সিংহ বলেন, কেন্দ্রের এই বিধিনিষেধ ভুল। কোনো রকম চিন্তা না করেই এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, ইঞ্জেকশনের ঘাটতি মেটাতে এই নির্দেশ জারি করেছে কেন্দ্র। একে চরম অব্যবস্থা বলে আখ্যা দেন বিচারপতি।
বিচারপতির অভিযোগ, রাজ্যগুলোতে ঠিক মতো রেমডেসিভিয়ার বিলি করছে না কেন্দ্র। এই কারণেই অক্সিজেন থেকে ইঞ্জেকশন সব কিছুর কালোবাজারি চলছে। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার রাতে ওই আইনজীবীর জন্য তিনটি ইঞ্জেকশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, শুধু দিল্লিতেই ৫০ হাজারের বেশি রেমডেসিভিরের ইঞ্জেকশন জোগান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দিল্লি সরকারের অভিযোগ, মাত্র ২৫০০ রেমডেসিভির পেয়েছে তারা।
মোদী সরকার কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুতি না নিয়ে লাখ লাখ প্রতিষেধক, ইঞ্জেকশন বিদেশে রপ্তানি করেছে বলে এত দিন অভিযোগ তুলছিল বিরোধীরা। সে দিকে আঙুল তুলে দিল্লি হাই কোর্টও বলেছে, ওষুধের অভাবে যন্ত্রণা ভোগ করছে দেশের নাগরিকরাই। সবার কাছেই হাই কোর্ট আবেদন জানিয়েছে, এখন অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখে পড়েছে দেশ। তাই অক্সিজেন সিলিন্ডার বা প্রতিষেধকের কোন রকম কালোবাজারি হওয়া উচিত নয়।
এসএন