ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগণনা। তৃণমূল থাকছে না বিজেপির উত্থান হচ্ছে-দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা শেষে আজই সেই প্রশ্নের উত্তর মিলতে যাচ্ছে।
হ্যাটট্রিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি প্রথমবার বাংলায় নরেন্দ্র মোদির পদ্মফুল ফুটবে-এমন প্রশ্নই এখন ঘুরে ফিরে সবার মুখে। পশ্চিমবঙ্গে আক্রমণাত্মক প্রচার, পাল্টা আক্রমণ, রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে আট দফায় ৩৩ দিন ধরে ভোটপর্ব চলেছে। কোন দল বাংলার মসনদে উঠবে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে আজ।
বেশিরভাগ বুথফেরত সমীক্ষায় তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্লা কিছুটা ভারী থাকলেও লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মানতে নারাজ তৃণমূল-বিজেপি উভয় দলই।
এবার গণনা পদ্ধতি পরিবর্তন হওয়ায় চূড়ান্ত ফল প্রকাশে কিছুটা দেরি হতে পারে। করোনার কারণে দ্বিগুণ করা হয়েছে কাউন্টিং হলের সংখ্যা। ২৯২টি আসনের জন্য ২৩টি জেলায় ১০৮টি গণনাকেন্দ্রে ৭০৬টি কাউন্টিং হল করা হয়েছে। প্রথমে গণনা হবে ব্যালট পেপার। পরে ইভিএমের ভোট গণনা। নিরাপত্তা নিশ্চিতে গণনাকেন্দ্রের বাইরে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৯৪টি। তবে সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের করোনাভাইরাসে মৃত্যু হওয়ায় দুই আসনে নির্দিষ্ট দিনে ভোট হয়নি। সেখানে ভোট হবে ১৬ মে। ফল প্রকাশ হবে ১৯ মে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে ২৯৪ আসন-বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১৪৮ পেলেই এবার সরকার গঠন করতে পারবে কোনো দল। রোববারই কোনো দল এককভাবে সেই গণ্ডি পেরোতে পারে কি না সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
তবে ঘাসফুল এবং পদ্মফুল দুই শিবিরই বলছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠতে চলেছে তাদের দল। অবশ্য কত আসন মিলতে পারে সে বিষয়ে মুখ খুলছে না দুই পক্ষই।
অন্যদিকে, জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বাম, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সংযুক্ত মোর্চা। বুথফেরত সমীক্ষায় ভরাডুবির আভাস দেওয়া হলেও সংযুক্ত মোর্চার বিশ্বাস, তৃণমূল এবং বিজেপির বিকল্প হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষ জোটকেই বেছে নিয়েছে মানুষ। সংযুক্ত মোর্চার আশা পূরণ হবে কি না তা কয়েক ঘণ্টা মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
এক দশক আগে তিন দশকের বেশি সময়ের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় বসেছিল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বাম ও কংগ্রেস। এবারই সরাসরি বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানায় বিশ্লেষকরা।
অথচ ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে এই রাজ্যে মাত্র তিনটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সেই বিজেপিই দখল করে ১৮টি আসন। এরপর থেকেই বিজেপির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। বিজেপিতে যোগ দেয় তৃণমূলের অনেক সংসদ সদস্য। নিয়মিতই রাজ্যে সভা-সমাবেশ করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এসএন
