আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা; ৭ আসামির জামিন

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা; ৭ আসামির জামিন

সাতক্ষীরায় ২০০২ সালে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার ৭ আসামিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ ১৮ জনের জামিন চেয়ে করা আবেদন শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ আদেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বাকিদের বিষয়ে আগামী ৩০ মে আদেশ দেয়া হবে।

এই মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারসহ ১৯ জন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে আবদুস সাত্তারসহ ১৮ জনের জামিন আবেদনের ওপর আজ মঙ্গলবার সাতজনের বিষয়ে আদেশ দিলেন হাইকোর্ট। বাকিদের বিষয়ে আগামী ৩০ মে আদেশ দেওয়া হবে। আর হাবিবুল ইসলামের জামিন আবেদন অন্য আদালতে বিচারাধীন।

বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ওইদিন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেন।

মামলা তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলার আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে রাকিবের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেয়া হয়।

রাকিবের আবেদন ছিল, যখন ঘটনার কথা বলা হয় তখন, অর্থাৎ ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না।

এর পর গত বছরের ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

এরপর বিচার শেষে সাতক্ষিরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সব আসামিকে সাজা দিয়ে রায় দেন। রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। পরে তারা জামিন আবেদন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ ১৮ আসামি।

২০০২ সালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়ি বহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।

এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়ি বহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন। ওইদিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন।

শেখ সোহান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন শেখ | হাসিনার | গাড়িবহরে | হামলা | ৭ | আসামির | জামিন