বিশ্বের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় না আনতে পারলে করোনা মহামারি নির্মূল সম্ভব হবেনা বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। শুক্রবার ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে একথা বলেছেন সংস্থাটির ইউরোপীয় শাখার পরিচালক হ্যান্স ক্লাগ।
এক সাক্ষাৎকারে এএফপিকে হ্যান্স ক্লাগ বলেন, করোনা ইস্যুতে বিশ্বজুড়েই মানুষের মধ্যে এক ধরণের গা ছাড়া মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারি শেষ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে-এমন ভাবনার কোনো সুযোগ এখন পর্যন্ত নেই। বিশ্বের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার আগ পর্যন্ত নির্মূল হবে না এই মহামারি।
ক্লাগ আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী গণটিকাদান কর্মসূচি কাঙ্খিত মাত্রার তুলনায় অনেক ধীরগতিতে চলছে। পাশাপাশি করোনার বিভিন্ন অভিযোজিত ধরনের উদ্ভব ও এগুলোর উচ্চ সংক্রমণ ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগও জানান তিনি।
গেল এক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী মানবদেহে সংক্রমিত হতে হতে কয়েকবার অভিযোজনের মধ্য দিয়ে গেছে সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাস। এর ফলে ভাইরাসটির একাধিক ধরনের উদ্ভব ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, নতুন ধরণগুলো প্রচলিত সার্স-কোভ-২ মূল ভাইরাসটির তুলনায় অনেক বেশি প্রাণঘাতী ও উচ্চ সংক্রমণশীল।
এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে হ্যান্স ক্লাগ বলেন, ব্যাপারটি সত্যিই খুব উদ্বেগের। কারণ ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি প্রচলিত সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির তুলনায় এর ব্রিটিশ ভ্যারিয়েন্ট বি.১১৭ এর সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি। আবার এখন দেখা যাচ্ছে, ভাইরাসটির ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি.১৬১৭ এর ক্ষতির ক্ষমতা ব্রিটিশ ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি।
সাক্ষাৎকারে ক্লাগ জানান, করোনার ক্রমাগত অভিযোজন এবং এর ফলে নিত্য নতুন ধরনের আবির্ভাব বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতি আরো তীব্র করে তুলছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে টিকাদান কর্মসূচী আরও গতিশীল করতে হবে।
ডব্লিউএইচওর ইউরোপীয় শাখার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপের মোট ৫৩টি দেশ এবং এলাকার মোট জনসংখ্যার মাত্র ২৬ শতাংশকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া গেছে।
এএফপির পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে। টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছে আরও কম। ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।
টিকাদান কর্মসূচির ধীরগতি ইউরোপে করোনাকে দীর্ঘস্থায়ী করছে উল্লেখ করে হ্যান্স ক্লাগ বলেন, সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। মহমারিকে লাগাম টানতে হলে এই মুহূর্তে গতির দিকে সবচেয়ে বেশি মনযোগ দিতে হবে।
এসএন
