শিশুদের জন্য স্কুলে ব্যবহৃত বেঞ্চ বা চেয়ারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এছাড়া দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ভারী স্কুলব্যাগ বহন করে। দীর্ঘসময় ভারী ব্যাগ বহনের কারণে অনেকের মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যায়, পিঠে-ঘাড়ে চাপ পড়ে। অল্প বয়স থেকেই তারা মেরুদণ্ডের সমস্যা নিয়ে বেড়ে ওঠে। পরে এরা ৪০-৫০ বছরে পৌঁছালে অনেকেই মেরুদণ্ডজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন।
রোববার (১৬ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব স্পাইন দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ নিউরো স্পাইন সোসাইটি আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে আলোচনায় বক্তারা এ কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য শ্রেণিকক্ষে বসার ব্যবস্থা থাকে না। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে তাদেরও মেরুদণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
সেমিনারে বলা হয়, বিশ্বের ৫৪ কোটি মানুষ মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগছেন। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের এ সমস্যা রয়েছে। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার এ ধরনের রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। বাংলাদেশের এসব রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ২১২ জন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
বক্তারা আরও বলেন, অনেক সময় গাছ থেকে পড়ে যাওয়া ও আঘাতজনিত সমস্যা হলে অস্ত্রোপচার করতে হয়। অন্য রোগীদের ইনজেকশন, ওষুধ ও থেরাপি জাতীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রতিবছর এ রোগে আক্রান্ত ৪০ হাজার রোগীর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। এদের অধিকাংশই থেকে যান চিকিৎসার বাইরে। তাছাড়া ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে পারেন না।
সেমিনারে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে উন্নতমানের নিউরো স্পাইনের সব ধরনের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোকে বিশ্বমানের করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই বাংলাদেশে নিউরো সার্জারির এমএস কোর্স চালু করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্পাইন দিবস-২০২২ এর এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- 'মেরুদণ্ড আপনার অমূল্য সম্পদ, মেরুদণ্ডকে সুস্থ রাখতে হবে’। দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ নিউরো স্পাইন সোসাইটি একটি শোভাযাত্রা ও পরে বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করে।