ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি আসায় এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে নিজস্ব সংকেত ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এই সতর্কতার পদক্ষেপ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য উঠানো-নামানোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া সিত্রাং’র কারণে সাগর উত্তাল থাকায় বহিনোঙরেও পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লাইটার জাহাজগুলোকে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর আশপাশে আনা হয়েছে। অপরদিকে বড় জাহাজগুলোকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দরের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, আবহাওয়া অফিস থেকে ৬ নম্বর সংকেত জারির পর অ্যালার্ট-৩ জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপরই জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। জেটি থেকে পালাক্রমে জাহাজ সাগরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জেটিতে থাকা জাহাজে ব্যাপক আঘাত লাগে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে জাহাজ জেটি থেকে কিছুটা দূরে সাগরে পাঠানো হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এদিকে, সাগর আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভারি বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’র প্রভাবে সোমবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক স্থানে ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও হতে পারে ভুমিধস। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। বইছে ঝড়ো হওয়া।