বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের (২৪) হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া প্রধান আসামি তার বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে রামপুরা থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বুশরার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়নি ফারদিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
বুধবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় বান্ধবী বুশরাকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, নিখোঁজের তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদীতে পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবেরও যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন সবার বড়।
নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শেখ ফরহাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, তার মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য উপাত্ত ও আলামত মহাখালি ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে তাকে কীভাবে মারা হয়েছে।
ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা ৮ নভেম্বর বলেছিলেন, দেশের তিনটি শীর্ষ বিদ্যাপিঠে সুযোগ পাওয়ার পর সে বুয়েটে ভর্তি হয়। তবে আবাসিক হলের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে হলে যেতে চায়নি। ফারদিন বাসায় থেকেই তার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে জড়িতদের দ্রুত সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।