দেখতে দেখতে শেষ হতে চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। আবহাওয়াটা যদিও অনুকূলে নেই খেলার। ফাইনালের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা ১০০ ভাগ। পূর্বাভাস জানাচ্ছে ১০ থেকে ২০ মিলি মিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তো আছেই। সঙ্গে বজ্রঝড়ের সঙ্গে আছে ভারী বর্ষণও। তারপরও ফাইনাল বলে কথা।
আজ (রোববার) ঐতিহাসিক মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় শিরোপা লড়াইয়ে নামবে পাকিস্তান আর ইংল্যান্ড। কার হাতে উঠবে ট্রফি?
কোথায় যেন দুই দলেরই ভাগ্য একই সুতোয় গাঁথা! দুটো দলই শুরুতে নিজেদের ঠিকঠাক চেনাতেই পারছিল না। পাকিস্তান তো হেরেই বসেছিল ভারতের কাছে। ইংল্যান্ড অবশ্য আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুরু করে। এরপরই আয়ারল্যান্ডের কাছে হারে চুপসে যায়। তবে সেই ধাক্কাটাই জাগিয়ে দেয় জস বাটলারদের। তারপর তো সব অনিশ্চয়তা পেছনে ফেলে দল ফাইনালে। সবচেয়ে বড় কথা ভারতের স্বপ্ন মাড়িয়ে ইংলিশরা উঠে এসেছে শিরোপা লড়াইয়ে।
একইসঙ্গে ৩০ বছরের পুরোনো স্মৃতিটাই জেগে উঠেছে। তিন দশক আগে এই মেলবোর্নেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। ফের কই মাঠে একই প্রতিপক্ষ তখন তো বাড়তি একটা আবেগ কাজ করবেই পাকিস্তানিদের।
এই যেমন মিল এখানেই শেষ নয়। ১৯৯২’র ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ-আইসিসির বৈশ্বিক দুটি আসরে পাকিস্তানের ফাইনালে ওঠার গল্পটাতে দারুণ মিল। সেবার ১০ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হার দিয়ে শুরু, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে আত্মসমর্পন, বৃষ্টিভাগ্যে ইংল্যান্ডের কাছ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে উঠা যখন যদি-কিন্তুর সমীকরণে, সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে সেই পাকিস্তানই জিতে নেয় বিশ্বকাপ শিরোপা। ইমরান খান ছিলেন সেই জয়ের অগ্রভাগে!
চলতি বিশ্বকাপেও একইভাবে পথ হারাতে হারাতে কখন যে বাবর আজমরা উঠে গেছে ফাইনালে। ইতিহাস, ভেন্যু আর প্রতিপক্ষ সব যখন এমন মিল-তখন বাবর কেন হতে চাইবেন না ইমরান খান?
অবশ্য ইংলিশরাও কম যায় না। তারা ভারতের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে উঠে এসেছে ফাইনালে। সেমি-ফাইনালে ১০ উইকেটের জয়ের পর তো মাটিতে পা পড়ার কথা না। তারপরও বাটলার ভুলে যাননি নিকট অতীত, ‘আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচতে হার ব্যাপক হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই ম্যাচে হার থেকে আমরা বেশ কিছু শিক্ষা লাভ করেছি। সেটিই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। সেই হার আমাদের ধাক্কা দিয়েছিল। আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত যে ক্রিকেট আমরা খেলেছি, তাকে সেই ম্যাচের প্রতিক্রিয়ায় হিসেবে দেখতে পারি।’
ফাইনালে এসে বলা হচ্ছে লড়াইটা হবে পাকিস্তানি পেসারদের সঙ্গে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের। অবশ্য পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে এগিয়ে রাখতে হবে ইংলিশদেরই। যেখানে আগের সাক্ষাতের মধ্যে ১৮বার জিতেছে তারা। ৯বার পাকিস্তান। কিন্তু এবার খেলাটা ঠিকঠাক হবে তো? শনিবার গোটা রাতভরই ঝরেছে বৃষ্টি! একেবারে বাংলাদেশের কাদুনে বর্ষার মতো! টিপ টিপ বৃষ্টি রাত শেষে কি আশ্চর্য, সকালে দেখা মিললো রোদের!
এমন রোদ-বৃষ্টির খেলায় না জানি আবার ফাইনালটাতে হেসে উঠে দুই দলই। বিশ্বকাপ এমন দৃশ্য এর আগে যে কখনোই দেখেনি!