কাতারে আয়োজিত ফুটবল বিশ্বকাপে আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) এই প্রতিবেদন লিখার সময় আর্জেন্টিনা ও সৌদি আরব ম্যাচ চলছে। এই ম্যাচের আগে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রেফারি স্ল্যাভিক ভিনসিস। মেসির ম্যাচে রেফারিংয়ের দায়িত্বে থাকা স্ল্যাভিক ‘বহু বিতর্কের’ পর আবার বাঁশি মুখে নামলেন ফুটবল ময়দানে।
২০২০ সাল। একটি ভিডিও নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়। ফুটবলপ্রেমীরা চিনতে পারেন মাথা ঝুঁকিয়ে পুলিশের সামনে বসে থাকা টানটান চেহারার এক ব্যক্তিকে। ইনিই তো স্ল্যাভিক ভিনসিস!
ওই বছর পুলিশ স্ল্যাভিককে আটক করেছিল। সে সময় তার সঙ্গে বসনিয়ায় ২৬ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী ধরা পড়েন। ওই নারীরা সবাই যৌনকর্মী ছিলেন বলে অভিযোগ। এই রেফারির সঙ্গে আটক হওয়া প্রত্যেকের কাছ থেকে কোকেন পাওয়া গিয়েছিল। কারও কাছে আবার পিস্তলও পাওয়া যায়।
স্ল্যাভিকসহ কয়েকজন কুখ্যাত অপরাধীকে আটকের পর একটি লিখিত বিবৃতি দেয় পুলিশ। তাতে জানানো হয়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযানে গিয়ে একটি বাড়ি এবং কয়েকটি গাড়ি থেকে ১৪ প্যাকেট হেরোইন, ১০টি পিস্তল, ১০ হাজার ইউরো, ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, দলটি অবৈধভাবে নদীপথে যাতায়াত করত। বসনিয়া হার্জেগোভিনা এবং সার্বিয়া অঞ্চলে বিভিন্ন অবৈধ এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাত তারা।
আদালতেও তোলা হয়েছিল ফিফার এই রেফারিকেও। তবে মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন তিনি। পরে এই ঘটনার জন্য বার বার দুঃখপ্রকাশ করেন স্ল্যাভিক।
স্লোভেনিয়ার একাধিক সংবাদমাধ্যম স্ল্যাভিককে উদ্ধৃত করে খবর প্রকাশ করেছিল। সেখানে এই রেফারি বলেন, অদৃষ্টই আমাকে ওই খামারবাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। আমার নিজের একটি কোম্পানি আছে। একটি ব্যবসায়িক বৈঠকের জন্য বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় গিয়েছিলাম। সেখানে কয়েকজন আমাকে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ করেছিলেন। সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করাই ছিল আমার জীবনের অন্যতম বড় ভুল। এর জন্য এখনও লজ্জা হয় আমার।
এ নিয়ে স্লোভেনিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ভ্লাদা সেইনের দাবি ছিল, স্ল্যাভিকের ওই স্থানে উপস্থিত থাকা আসলে একটি দুর্ঘটনা। ভুল সময়ে ভুল জায়গায় থাকার মাশুল তাকে গুনতে হতে পারে পেশাগত জীবনেও।
স্ল্যাভিকের ফুটবল ক্যারিয়ার প্রায় ১২ বছরের। আগে স্লোভেনিয়ান বেশ কিছু ফুটবল ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০১০ সালে ফিফার স্বীকৃতি পান। এছাড়া ২০১৬ ও ২০২১ ইউরোর বাছাইপর্বে ম্যাচ পরিচালনা করেছেন ভিনচিচ।