আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আমি শুধু মোদিকে তাড়াতে চাই: মমতা

আমি শুধু মোদিকে তাড়াতে চাই: মমতা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হটানো এখন একমাত্র লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। বুধবার নিজের মুখেই এই কথা বলেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন মমতা। এবার একমাত্র লক্ষ্য দেশ থেকে মোদি সরকারের পতন।

মোদি সরকারকে উৎখাতে পুরো দেশে যেসব রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় নেই সেগুলোকে নিয়ে একটি ইউনিয়ন তৈরির পরিকল্পনা করেছেন মমতা। এজন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

মমতা বলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে বিজেপি সরকার। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প সবকিছুতেই চরম দুর্দশা। একটি ইউনিয়ন তৈরি করে রাজ্যগুলোকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে।

এবার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়েছে তৃণমূল। তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন তিনি।

বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন দিল্লি সীমান্তে চলা কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত। এই আন্দোলনকে প্রথম থেকেই সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেছিল সংসদীয় দলও। কৃষক বিরোধী কৃষি আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন টিকায়েত। পরে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, মমতা বিজেপির হাত থেকে বাংলাকে বাঁচিয়েছেন, এবার দেশকে বাঁচাতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের দাবিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলনের পাশে থাকব। মোদি সরকারকে হটানোই এখন লক্ষ্য। এজন্য বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলব। জোট বেঁধে করণীয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

তবে এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগেও বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ব্রিগেডে সব বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ব়্যালিও অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ভোটের ফলে নজর কাড়তে ব্যর্থ হয় সেই জোট।

মমতার কৌশলী বার্তা, যারা বিজেপির পুরনো লোক আছেন। যারা পুরনো ঘরানার মানুষ। আর যে যুবক-নেতারা মোদিকে দেখে চলে গিয়েছেন। তাদের ফিরে এসে একাট্টা হয়ে হিন্দুস্তান, কৃষক, যুবক, শ্রমিকদের বাঁচানোর আবেদন থাকল আমার।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, একুশের বিধানসভার জয়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে গেরুয়া নেতৃত্ব। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানোর হিড়িক পড়ে যায়। কিন্তু ভোটের ফলে ধরাশায়ী হয় বিজেপি। প্রচারে দুশো আসন জয়ের দাবি করলেও বাস্তবে এক শ’র গণ্ডি ছুঁতে পারেনি দিলীপ-শুভেন্দুরা। উল্টো সব বুথ ফেরত সমীক্ষা তুচ্ছ করে ২শ’র বেশি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল।

এবারের নির্বাচন ছিল কার্যত মমতা বনাম মোদি। তাতেই সাফল্য পান তৃণমূল নেত্রী। মমতার নেতৃত্বে চমকপ্রদ জয়ে মোদিসহ পুরো বিজেপি শিবিরকে ধাক্কা দেওয়া গেছে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

এদের অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছে মোদিকে হটাতে একমাত্র যোগ্য প্রতিপক্ষ মমতা। কংগ্রেসের বহু শক্তিশালী নেতা থেকে বিরোধী নেতৃত্ব ২০২৪ সালের লোকসভায় মমতাকেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের পক্ষপাতি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীরও বিরোধীদের এই অবস্থান অজানা নয়। তাই দেরি না করে এবার আলোচনার মাধ্যমে বিজেপি বিরোধী ইউনিয়ন গঠনের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন শুধু | মোদিকে | তাড়াতে | চাই | মমতা