আর্কাইভ থেকে এশিয়া

ইসলামকে মুছে ফেলতে চায় চীন: অ্যামনেস্টি

ইসলামকে মুছে ফেলতে চায় চীন: অ্যামনেস্টি

চীন ইসলামকে মুছে ফেলতে চাইছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। চীনের উইঘুরদের নিয়ে নতুন প্রতিবেদনে এ অভিযোগ এনেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি।

চীনের উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে নতুন ১৬০ পাতার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। রিপোর্টের শিরোনাম হলো, আমরা যেন যুদ্ধে শত্রুপক্ষ।

অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, মানবতার বিরুদ্ধে চীন যে অপরাধ করেছে তা তথ্যসহ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, অন্য দেশগুলো যেন সাহসী হয়ে উপায় ঠিক করে এবং চীনকে এই কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করে।

অ্যাগনেস আরো বলেছেন, আমরা যে তথ্যপ্রমাণ দিয়েছি তাতে দেশগুলোর পক্ষে চুপ করে থাকাটা মুশকিল।

ইতিমধ্যে উইঘুরদের প্রতি চীনের নীতিকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য উইঘুরদের বিরুদ্ধে কোনোরকম অত্যাচারের কথা অস্বীকার করেছে চীন। দেশটির অভিযোগ, চীনের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে বাইরের দেশগুলো।

২০১৯-এর অক্টোবর থেকে ২০২১ এর মে পর্যন্ত গবেষণা করেছে অ্যামনেস্টি। ১২৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে তারা। এর মধ্যে ৫৫ জন চীনের উইঘুর শিবিরে ছিল। আর ৬৮ জন সেই সব পরিবারের সদস্য যেসব পরিবার থেকে কেউ হারিয়ে গেছে বা তাদের আটক করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবেদন বলছে, শিনজিয়াংয়ে ১০ লাখের বেশি মানুষকে শিবিরে পাঠানো হয়েছে। মুসলিমদের ভয় দেখানোর জন্য তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সাইটগুলো বন্ধ করে দিয়েছে চীন। অ্যামনেস্টিকে প্রচুর সাক্ষী জানিয়েছে, ইসলামকেই মুছে ফেলতে চায় চীন।

অনেকে বলেছে, মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এমনকী মসজিদে ও মুসলিমদের বাড়িতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ছবি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সাক্ষাৎকার নেওয়াদের অনেকেই বলেছে, চীনে নিজেদের ধর্মাচরণ করতে ভয় পাচ্ছে তারা। তারা জানে রাষ্ট্র তাদের উপর নজর রাখছে।

উইঘুর শিবিরের কথা

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই উইঘুরদের মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের তথাকথিত শিক্ষা-শিবিরে নেওয়া হয় এবং জোর করে অপরাধের কথা স্বীকার করানো হয়।। এরপর তাদের মধ্যে কিছু মানুষকে শিবিরে রাখা হয়। তারা সন্ত্রাসবাদী এবং বিশ্বাসযোগ্য নয় এই কারণ দেখানো হয়।

অ্যামনেস্টিকে শিবিরে আটকে রাখা কয়েকজন বলেছে, শিবিরের অবস্থা চীনের কারাগারের থেকেও খারাপ। তাদের সংশোধন-ক্লাসে যেতে হয়। তার আগে সারাদিন বসিয়ে রাখা হয়। শিবিরের ক্লাসে তাদের ইসলামের খারাপ দিকগুলো বাধ্যতামূলকভাবে শিখতে হয়।

অ্যামনেস্টির সুপারিশ

মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, চীনকে শিবির থেকে সব উইঘুরকে মুক্তি দিতে হবে। যদি তাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অকাট্য প্রমাণ না থাকে। এই শিবির চীনকে বন্ধ করতে হবে। উইঘুরদের বিরুদ্ধে সব অত্যাচার ও তাদের হেনস্থা করা বন্ধ করতে হবে। জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও অপরাধের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক দল পাঠাবে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ। চীন বেআইনি কাজ করেছে এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার বলে জানিয়ে দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ইসলামকে | মুছে | ফেলতে | চায় | চীন | অ্যামনেস্টি