তথ্য গোপন করে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট সরাসরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার (১৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের বিচারকগণ আদেশের কপিতে স্বাক্ষরের পর এটি প্রকাশ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
তিনি বলেন, গত ২৭ মে আদালত এ আদেশ দিয়েছিলেন। আজ সেটি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে গোপন তথ্য দিয়ে কেউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সরাসরি তাদের রেজাল্ট বাতিল করতে হবে। রিট আবেদনকারীদের অভিযোগগুলো জমা দেয়ার পরে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্টদেরকে জানাতে হবে।
এর আগে ২৭ মে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ফল বাতিল করে সংশোধিত নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ‘মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল করে নতুন মেধাতালিকায় ভর্তি চেয়ে রিটটি পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, পর্যবেক্ষণসহ রিটটি খারিজ করা হচ্ছে। কোনো পরীক্ষার্থীর ফল বিষয়ে অভিযোগ থাকলে তা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করবেন। সাতদিনের মধ্য কর্তৃপক্ষকে কারণসহ বিষয়টি নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে জানাতে হবে। এছাড়া তথ্য গোপন করে কোনো প্রার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে থাকলে এবং তা চিহ্নিত হলে তাদের ভর্তি তাৎক্ষণিক বাতিল হবে।’
এর আগে গত সোমবার (২৪ মে) এই রিটের শুনানি শেষ হয়। ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
উল্লেখ্য, গত ১৯ মে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে তা সংশোধন সাপেক্ষে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়।
রিটে বলা হয়েছে, গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭ দশমিক ৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন, তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে। কিন্তু প্রকাশিত ফল থেকে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি পালন করা হয়নি।
যেসব পরীক্ষার্থীর ৭ দশমিক ৫ নম্বর কাটার কথা, সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কাটা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থী ২ দশমিক ৫ নম্বর বেশি পেয়েছে।
শুভ মাহফুজ