আর্কাইভ থেকে আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকায় পাথর নাকি হীরা!

দক্ষিণ আফ্রিকায় পাথর নাকি হীরা!

হীরার খনি মানেই আফ্রিকা। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার খোয়াজুলু-নাতাল প্রদেশের একটি গ্রামে মাটি খুড়লেই হীরার মতো পাথর পাওয়া যাচ্ছে। মহামূল্যবান রত্ম মনে করে মাটি খুঁড়ে যাচ্ছে গ্রামবাসী। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। পাথর সংগ্রহে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। কেউ কেউ পাথর বিক্রি করাও শুরু করেছে। এক শ’ থেকে তিন শ’ র‍্যান্ডে (দেশটির মুদ্রা) বিক্রি হচ্ছে পাথরগুলো।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গেল শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার খোয়াজুলু-নাতাল প্রদেশের খোয়াহ্লাথি গ্রামে প্রথমে একটি বেনামী পাথর পাওয়া যায়। হীরা হতে পারে ধরে নিয়ে এ ধরনের পাথর পেতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে স্থানীয়রা। সোমবার পাথরের খোঁজে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে জড়ো হয়ে ওই গ্রামের আশেপাশের এলাকায় খোড়াখুড়ি শুরু করে সহস্রাধিক মানুষ।

ঘরে থাকা সাধারণ জিনিস দিয়েই মাটি খুঁড়ছে তারা। কোদালের পাশাপাশি কেউ ব্যবহার করছেন বেলচা, কেউবা খালি হাতেই মাটি খুঁড়ে চলেছে। খোঁড়াখুড়ি করে মুঠোভর্তি স্বচ্ছ পাথর পাওয়া মেন্দো সাবেলো বলেন, এই আবিষ্কারে জীবন বদলে যাবে। এর অর্থ আমাদের জীবন বদলে যাবে। কারণ নিদারুণ অর্থকষ্টে ভুগছে তারা। কারো কাছেই যথাযথ চাকরি নেই। আমি কম মজুরির চাকরি করি। তবে যখন বাড়ি ফিরি তখন সত্যিই আনন্দিত হয় তারা।

তার সঙ্গে একমত হয়ে বেকার তরুণ সুকুমবুজু মভেলে বলেন, জীবনে কখনও হীরা দেখিনি বা স্পর্শও করিনি। প্রথমবার এখানে এসে হীরা ধরে দেখছি।

খোঁজ পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই এলাকার নমুনা বিশ্লেষণের জন্য ভূতাত্ত্বিক এবং খনি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক টেকনিক্যাল প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে দলটি।

পাথরটি কী তা এখনও শনাক্ত করা না গেলেও খোয়াহ্লাথি গ্রামের খোলা মাঠে বিভিন্ন বয়সীদের ভিড় চলছে। শাবল, গাইতি দিয়ে খোড়াখুড়ি চালিয়ে যাচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বেকারত্বের হার চরম। দারিদ্রের কবলে বন্দি লাখ লাখ মানুষ। ১৯৯৪ সালে বর্ণবিদ্বেষের অবসান হলেও এখনও বৈষম্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির অর্থনীতি। পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলেছে করোনা মহামারি।

দক্ষিণ আফ্রিকায় দীর্ঘদিন ধরেই বেকারত্ব একটি বড় সমস্যা। লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। ১৯৯৪ সালে বর্ণবাদের অবসানের পর থেকে প্রায় তিন দশক ধরে অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করছে তারা। করোনা অতিমারির কারণে তা আরো বেড়ে গেছে।

খননকাজে এতো মানুষ জড়িত থাকায় করোনা আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই সেখান থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রাদেশিক সরকার। এছাড়াও, খনি কর্তৃপক্ষকে জায়গাটি দ্রুত পরিদর্শনের আহবান জানানো হয়েছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন দক্ষিণ | আফ্রিকায় | পাথর | নাকি | হীরা