আর্কাইভ থেকে জাতীয়

আমরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করি: প্রধানমন্ত্রী

আমরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করি: প্রধানমন্ত্রী
রাজনীতি থেকে প্রশাসন সবক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের মানুষের উন্নয়ন হয়। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কাজ করছে সরকার। বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকাবস্থায় দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বিএনপি। ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি শোষণ-নির্যাতন ছাড়া দেশকে কিছুই দেয়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিএনপির আমলের সঙ্গে একাত্তরের কোনো তফাত দেখিনি। বিএনপি ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চরমভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে। মেয়েদেরকেও ছাড়েনি তারা। একদিনে পুলিশ অন্যদিকে ছাত্রদলের গুণ্ডাবাহিনী আমাদের মেয়েদের ওপর নির্যাতন করেছে। কাউকে রেহাই দেয়া হয়নি। তারা যেভাবে অত্যাচার করেছে আমরা তার কিছুই করিনি। উন্নয়নে বিশ্বাসী বলেই আমরা প্রতিশোধ নেইনি। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলাই বিএনপির চরিত্র। হাওয়া ভবন খুলে লুটপাট করতে পারে তারা, বিএনপি লুটপাট ছাড়া দেশকে কিছুই দিতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, তাদের আন্দোলন মানেই মানুষ পুড়িয়ে মারা, বিএনপির আন্দোলন মানেই অগ্নিসন্ত্রাস। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসনের সময় যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। তাদের শাসনামলে নারীদের ওপর জুলুম-অত্যাচার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যুব মহিলা লীগের সবাইকে অভিনন্দন জানাই যে, ওই চরম অত্যাচারের সময়েও পুলিশ ও বিএনপির গুণ্ডা বাহিনীর নির্যাতনের মুখেও তারা টিকে ছিল। সেই দিক থেকে আমরা কিন্তু বিএনপির ওপর কোনো প্রতিশোধ নেয়নি। কারণ আমরা দেশের উন্নয়নে মনোযোগী। ওদের শাসন মানেই নির্যাতন-হত্যা-অত্যাচার। ২০০৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এ নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেন নি, তুলতে পারেন নি। তিনশ আসনের মধ্যে বিএনপি কয়টি পেয়েছিল! মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল আর জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭ আসন। সে জন্যই খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেতা হতে পেরেছিলেন। এ সময় ব্যাংকে টাকা থাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজব ছড়াচ্ছে কেউ-কেউ! ব্যাংকে নাকি টাকা রাখা যাবে না, তারা আসলে চোরদের এজেন্ট কী না সেটা খোঁজ নিতে হবে। কেননা, তাদের গুজবে বিশ্বাস করে মানুষ টাকা তুলে ঘরে রাখছে। সেটা আবার চোর চুরি করছে, কেউ গুজবে বিশ্বাস করবেন না। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিডের ধাক্কা না এলে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করতে পারতাম। এ বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ থামাতে পারবে না। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন থানা,ওয়ার্ড থেকে মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলনে উপস্থিত হন। যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে আরও উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. দীপু মনি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুর সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ২০০২ সালের ৬ জুলাই যুব মহিলা লীগ গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে ১০১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটিতে বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার আহ্বায়ক ছিলেন। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সে কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। যুব মহিলা লীগের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। সে সম্মেলনে নাজমা আক্তার সভাপতি ও অপু উকিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন বছর পর পর সম্মেলনের কথা থাকলেও ১৩ বছর পর সংগঠনের দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ। ওই সম্মেলনে নাজমা আক্তার ও অপু উকিল পুনর্নিবাচিত হন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন জনগণের | সেবক | হিসেবে | কাজ | করি | প্রধানমন্ত্রী