রংপুরে ছাত্রলীগের নেতা হওয়ার লড়াইয়ে নেমে এবার কাগজ-কলমের পরীক্ষায় বসতে হলো । জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কে কতটা জানে, সে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হলো তাদের।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘কাউনিয়া উপজেলায় আমাদের কর্মিসভা ছিল। অনেকেই পদ পেতে আগ্রহী ছিলেন। সে কারণে সভা শেষে তাদের জীবনবৃত্তান্ত গ্রহণ করি। এরপর ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এই দুইটি বই থেকে প্রশ্ন করে তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়।’
গেল বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) একটি উপজেলায় পরীক্ষা হয়ে । আরও একটি উপজেলায় হবে শনিবার। এভাবে অন্য উপজেলাতেও হবে একই বাছাই প্রক্রিয়া।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাউনিয়া কলেজে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রথম পরীক্ষার পর শনিবার বিকালে পরীক্ষা নেয়া হবে পীরগাছা উপজেলায়। পর্যায়ক্রমে অন্য উপজেলাতেও এভাবে পদ প্রত্যাশীদের পরীক্ষায় বসতে হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাব্বির আহমেদ।
উপজেলা ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগে নেতৃত্বে আসতে চাওয়া পদপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হওয়ার পর ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার এই আয়োজন করা হয়েছে।
কাউনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক পদে আগ্রহী ৪১ জন এই পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষার জন্য সময় দেয়া হয়েছিল ৩০ মিনিট। প্রশ্ন আসে জাতির পিতার আত্মজীবনী ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে। তবে কে কত নম্বর পেলেন, প্রকাশ হয়নি এখনও। কারণ শেষ হয়নি খাতা দেখা।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে যাত্রা শুরু হয় ছাত্রলীগের, যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু।
ভাষা আন্দোলন, স্বাধীকার আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ আন্দোলন, ৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই সংগঠনের গৌরবোজ্জল ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ বাকগুলো নিয়ে পদপ্রত্যাশীরা কতটা জানেন, সেই পরীক্ষায় হলের দায়িত্বে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতিসহ ৬ নেতা।
পরীক্ষায় অংশ নেয়া সভাপতি পদপ্রত্যাশী জামিল হোসেন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি করি। এই সংগঠনটি একটি মেধাবীদের সংগঠন কিন্তু অনেকেই নেতা হতে চায়। তাই পরীক্ষা পদ্ধতিটি অনেক ভালো হয়েছে। যারা মাঠে ভালো করবে পরীক্ষায় ভালো করবে তারাই নেতা হবে।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ইমরান মিয়া বলেন, ‘নেতা বানাতে এই পদ্ধতি অবশ্যই প্রয়োজন। আমরা সাধুবাদ জানাই।
সাব্বির বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন-আদর্শ সম্পর্কে জানতে হবে, পড়তে হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে একটি নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হবে। আগামীতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখব।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম তানিম আহসান চপল বলেন, ‘আমরা শুরু করলাম। জেলার সব ইউনিটে আমরা এভাবে পরীক্ষা নিয়ে নেতৃত্ব বাছাই করব।’