বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস আজ। দিবসটি উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিজিবি।
আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) ফজরের নামাজের পর পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরে মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্বপালনের জন্য বিজিবি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সীমান্তেরর অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী-শিশু এবং মাদক পাচার রোধে সীমান্তে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বিজিবি। দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তাবিধানসহ দুর্যোগকালীন উদ্ধার কার্যক্রমেও এ বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসনীয়।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে দেয়া বাণীতে প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজিবিকে বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এ উপলক্ষে সকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন এবং সীমান্ত গৌরবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিজিবি সদর দপ্তরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবি দিবসের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ, বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবি সদস্যদের পদক প্রদান এবং পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার নেবেন।
বিজিবি দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানটি বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে স্মরণিকা প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকশ করা হবে।
এ ছাড়া এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিরাজমান পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আস্থা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেলে যশোরের বেনাপোল, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থলবন্দর সংলগ্ন আইসিপিতে বিজিবি-বিএসএফের জমকালো ‘জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনি’ অনুষ্ঠিত হবে।
বিজিবি দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে বুধবার সকালে পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে। দরবার শেষে মহাপরিচালক বিজিবিতে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবির কর্মকর্তা ও সদস্যদেরকে পদক ও ইনসিগনিয়া প্রদান করবেন।
এ ছাড়া অপারেশনাল কার্যক্রম, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান এবং অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারি সহকারী পরিচালক ও অনারারী সহকারী পরিচালক হতে অনারারি উপপরিচালক পদে পদোন্নতি প্রাপ্তদের র্যাঙ্ক ব্যাজ পরিধান করানো হবে। এ অনুষ্ঠানে অত্র বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা, অনুদান ও উপহার প্রদান করা হবে।
এ ছাড়া বিজিবি দিবস উপলক্ষে ওইদিন দুপুরে প্রীতিভোজ এবং সন্ধ্যায় পিলখানাস্থ ঢাকা সেক্টর মাঠে বিজিবির নিজস্ব অর্কেস্ট্রা ও শিল্পীসহ দেশের বরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষে পিলখানা ছাড়াও ঢাকার বাহিরে বিজিবির সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিট পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন, মিলাদ ও বিশেষ দোয়া, প্রীতিভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।