শুরু হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বের জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৬তম আসরের মিনি নিলাম। গত আসরের মতো এ আসরেও নিলামে অবিক্রীত থাকলেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
আজ শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) কোচিতে অনুষ্ঠিত হওয়া আইপিএলের নিলামে সাকিবের ভিত্তিমূল্য ছিল দেড় কোটি রুপি। ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজির কোনো দল তাকে দলে ভেড়ানোর আগ্রহ দেখায়নি।
কয়েক আসর ধরেই সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে ছিলেন সাকিব। তবে গেলো আসরে তাকে কিনতে কেউ আগ্রহ দেখায়নি। ফলে এবার ভিত্তিমূল্যই কমিয়ে দিয়েছেন এই সাকিব। তারকা বাঁহাতি অলরাউন্ডারের ভিত্তিমূল্য ছিল ২ কোটি রুপি। কিন্তু এবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দেড় কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে নাম লিখিয়েছেন সাকিব। তারপরও তাকে দলের ভেড়ানো আগ্রহ দেখায়নি আইপিএলের কোনো দল।
প্রথম দফায় অবিক্রীত থাকলেও, কোনো দল যদি চায় এখনো সাকিবকে দলে ভেড়াতে পারবে। তবে তা নির্ভর করছে দলগুলির চাহিদা ও জায়গা ফাঁকা থাকার ওপরে। সব দল মিলিয়ে দলগুলো কিনতে পারবে ৮৭ জন ক্রিকেটার, তার মধ্যে বিদেশি সর্বোচ্চ ৩০ জন।
সাকিব আল হাসানের আগে অবশ্য বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে নিলামে অবিক্রীত থেকেছেন ইংল্যান্ডের জো রুট ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশো। রুটের ভিত্তিমূল্য ছিল এক কোটি রুপি। অন্যদিকে রুশোর ভিত্তিমূল্য ছিল দুই কোটি রুপি।
এদিকে এবারই প্রথম পর পর দুই আসরে অবিক্রীত থাকলেন সাকিব। ২০১১ সালের পর কেবল ২০১৩, ২০২০ ও ২০২২ সাল বাদ দিয়ে বাকি সব আসরেই জনপ্রিয় এ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটিতে খেলেছেন সাকিব।
২০১১-২০২১ পর্যন্ত সাকিব কলকাতা নাইট রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএলে মোট ম্যাচ খেলেছেন ৭১টি। এর মাঝে ৫২ ইনিংসে ব্যাটার সাকিব ৭৯৩ রান করেছেন। এই রান তিনি করেছেন ১৯.৮৩ গড়ে। সাকিবের আইপিএল ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট ১২৪.৪৯। ব্যাটিং করতে নেমে তিনি মোট ১২ ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন। ২ বার অর্ধশতকের দেখা পাওয়া সাকিবের আইপিএলের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি অপরাজিত ৬৬ রানের। ২০১৬ এর আসরে গুজরাট লায়ন্সের সাথে ৫ উইকেটে হারা ম্যাচে তিনি এই ইনিংসটি খেলেন।
আইপিএলে সাকিব মোট চারবার ডাক মেরেছেন। ৫২ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৭৩টি বাউন্ডারির পাশাপাশি ২১ বার বলকে আকাশে উড়িয়ে পাঠিয়েছেন মাঠের বাইরে। সবগুলো আসর মিলিয়ে সাকিব ব্যাট হাতে মোকাবেলা করেছেন ৬৩৭টি বল।
ব্যাটার সাকিবের চেয়ে বল হাতেই আইপিএলে সাকিব বেশি সাফল্য পেয়েছেন। আইপিএলে মোট ১৪৮৪টি (২৪৭.২ ওভার) বল করে সাকিব দিয়েছেন ৭.৪৪ ইকোনোমি রেটে ১৮৩৯ রান। এই টুর্নামেন্টে একটি মেডেন ওভার রয়েছে সাকিবের। সবগুলো টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ২৯.১৯ গড়ে সাকিব উইকেট নিয়েছেন ৬৩টি।
সেরা বোলিং ২০১২ সালে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ইডেন গার্ডেনে। বল হাতে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সাকিব সেদিন প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হন। এসবের বাহিরেও সাকিব লুফে নিয়েছেন ১৪টি ক্যাচ।
আইপিএলে সাকিব মোট প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন ২ বার। দুবারই ২০১২ সালে। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ১৭ রানে ৩ উইকেটের পাশাপাশি লো স্কোরিং ম্যাচে সাকিব করেন গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি রান।
দ্বিতীয়বার সাকিব প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হন একই টুর্নামেন্টে পুনে ওয়ারিওর্সের বিপক্ষে। সেদিন বল হাতে ২ উইকেটের পাশাপাশি সাকিব ব্যাট হাতে করেন ৪২ রান।
আইপিএলে সাকিব মোট দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পান। প্রথমবার সাকিবের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স চ্যাম্পিয়ন হয় ২০১২ সালে। সেবার ফাইনালে মহাগুরুত্বপূর্ণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন সাকিব। ২০১৩ এর আইপিএল আসর ইনজুরিতে মিস করা সাকিব কলকাতায় ফেরেন ২০১৪ সালের আসরে। সেবার দ্বিতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় সাকিব ও তার কলকাতা দল।
২০১৮ সালের নিলামে সাকিবকে কিনে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ২০২১ ফের কলকাতায় ফেরেন সাকিব।