আর্কাইভ থেকে এশিয়া

শিশু মৃত্যুতে ভারতের ২টি কাশির সিরাপ ব্যবহার করা উচিত নয় : হুর

শিশু মৃত্যুতে ভারতের ২টি কাশির সিরাপ ব্যবহার করা উচিত নয় : হুর
ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানে অন্তত ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছিলো। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ভারতীয় ওই কাশির সিরাপ উজবেকিস্তানের শিশুদের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয় বলে পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের রাজধানী দিল্লির পার্শ্ববর্তী অঞ্চল নয়ডা-ভিত্তিক কোম্পানি ম্যারিয়ন বায়োটেকের তৈরি দু’টি কাশির সিরাপ উজবেকিস্তানের শিশুদের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয় বলে সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বুধবার এক চিকিৎসা সতর্কতায় ডব্লিউএইচও জানায়, ম্যারিয়ন বায়োটেকের নির্মিত নিম্নমানের চিকিৎসা পণ্যগুলো এমন পণ্য যা গুণমানে বা স্পেসিফিকেশন পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ডব্লিউএইচও’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উজবেকিস্তানে চিহ্নিত দু’টি নিম্নমানের (দূষিত) চিকিৎসা পণ্য নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই মেডিকেল সতর্কতা জারি করছে এবং গেলো বছরের ২২ ডিসেম্বর ডব্লিউএইচওকে এটি রিপোর্ট করা হয়েছে। নিম্নমানের চিকিৎসা পণ্যগুলো এমন পণ্য যা গুণমানের মান বা স্পেসিফিকেশন পূরণ করতে ব্যর্থ হয়ে থাকে। সতর্কতায় আরও বলা হয়েছে, ওই দু’টি পণ্য হলো আমব্রোনল (AMBRONOL) সিরাপ এবং ডক-১ (DOK-1) ম্যাক্স সিরাপ। উল্লিখিত দু’টি পণ্যের প্রস্তুতকারক হলো ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেড। ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুকারক এই সংস্থাটি আজ পর্যন্ত এই পণ্যগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে ডব্লিউএইচওকে নিশ্চয়তা প্রদান করেনি। এর আগে গেলো বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভারতীয় ওষুধ সেবনে শিশু মৃত্যুর কথা সামনে আনে। মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানে অন্তত ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সেসময় খবরে বলা হয়, ২১ শিশুর মধ্যে ১৮ জন যারা তীব্র শ্বাসযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সময় ডক-১ ম্যাক্স নামক সিরাপ গ্রহণ করেছিল এবং পরে মারা গেছে। সর্দি এবং ফ্লুর উপসর্গের চিকিৎসা হিসেবে ওষুধটি বাজারজাত করা হয় বলে কোম্পানির ওয়েবসাইটে তথ্য দেয়া হয়েছে। সিরাপটির একটি ব্যাচে ইথিলিন গ্লাইকোল পাওয়া গেছে, যা একটি বিষাক্ত পদার্থ বলে জানিয়েছে উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সিরাপটি উজবেকিস্তানে কুরাম্যাক্স মেডিকেল এলএলসি আমদানি করেছিল। আর এই ওষুধটি শিশুদের দেয়া হয়েছিল চিকিৎসকের কোনও ধরনের পরামর্শ ছাড়া। এর আগে গেলো অক্টোবরে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় কিডনি বিকল হয়ে ৭০ শিশুর মৃত্যু হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হয়, ভারতীয় কোম্পানি মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি সিরাপই পাঁচ বছরের কম বয়সী ওই শিশুদের কিডনি বিকল হওয়ার কারণ। এছাড়া সম্প্রতি ভারতের ১৬টি কোম্পানির ওষুধ আমদানি নিষিদ্ধ করেছে নেপাল। মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ায় ভারতীয় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল সরকার।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন শিশু | মৃত্যুতে | ভারতের | ২টি | কাশির | সিরাপ | ব্যবহার | করা | উচিত | নয় | | হুর