দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে ঠান্ডা ও কনকনে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘনকুয়াশায় কারণে টানা পাঁচ দিনের মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করায় এক জনদুর্ভোগ বেড়েছে। ভোর থেকে ঘনকুয়াশায় ঢাকা এ অঞ্চেলের পথঘাট। রাতভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝড়ে। সেই সাথে পথঘাট ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা।
দিনের বেলাতেও সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। শীত নিবারণের জন্য খড়-কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাছেন মানুষজন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শ্রমজীবি ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চারিদিকে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণের সময় মত কাজে বের হতে পারছে না শ্রমজীবিসহ খেটে খাওয়া মানুষজন। ঘন কুয়াশায় কৃষকের ভুট্টা, বোরো বীজতলা, মরিচ, বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজির বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। আবার অনেক কৃষকের বীজতলা কিছু নষ্ট হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহে প্রচন্ড ঠান্ডার কারণের শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মানুষের পাশাপাশি গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন পশু পাখিদের চরম ভোগান্তি চরমে।
আজ বহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় এ উপজেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬ টায় সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় গড়ম কাপড়ের অভাবে চরম দুদিন পাড় করছেন দরিদ্র ও ছিন্নমুল মানুষ।
রিকশা চালক বাবুল মিয়া জানান, ‘এক দিকে ঘনকুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে রিকশায় উঠতে চায় না। অন্য দিকে প্রচন্ড ঠান্ডায় চলাফেরা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফলে আমাদের আগের মত আয়-রোজগার কমে গেছে।’
নাওডাঙ্গা এলাকার দিনমজুর হাফেজ আলী ও ইসলাম মিয়া জানান, ‘এক সপ্তাহ থেকে প্রচন্ড ঠান্ডা। তার পরেও জীবিকার তাগিদে ঘনকুয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডার থাকার পরেও কাজে বেড়িয়েছি বাহে। কাজ না করলে সংসার চলবে কিভাবে না। অনেক মানুষ কম্বল পাইছে আমরা এখনো পাইনি।’
বালারহাট এলাকার ভ্যান চালক হাক্কু মিয়া ও জহুল হক জানান, ‘এমন ঠান্ডা আগে কখনো দেখিনি। ঠান্ডার কারণে ক্ষ্যাপ মারতে পারছি না। অনেক কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। কেউ একটা কম্বলও দেয়নি বাহে।’
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বিরাজ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান এ জেলায় টানা পাঁচদিন থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। তিনি আরও জানান এ মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরও বেশকিছু দিন অব্যাহত থাকবে।