বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর...
কবির ভাষাতেই বোঝা যাচ্ছে একজন সফল পুরুষের পিছনে থাকেন একজন নারী।
তাহলে সফল নারীর পিছনে থাকেন কে? এই প্রশ্নই নতুন করে তুলে দিলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী নীতু সিংকে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাতে তিনি বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুক একটি পোস্ট করেছেন।
তার দৃষ্টিতে, ‘হাস্যোজ্জ্বল নীতু সিং এখন সর্বত্র বিরাজমান। টিভিতে, দৈনিকে, সাপ্তাহিকে, টুইটারে, ফেসবুকে, ইন্সটাগ্রামে, পাপারাৎসির ক্যামেরায়, মুভিতে, পার্টিতে। ঋষি কাপুর বেঁচে থাকাকালীন তাকে কিন্তু এত দেখা যায়নি। পাবলিক ভুলেই গিয়েছিল নীতু সিং-কে। এখন যেন গ্রিক রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতো, নিজের পোড়া ছাই থেকে তিনি নতুন করে জন্ম নিয়েছেন।’
তারপরেই মোক্ষম বক্তব্য, ‘একজন নারীর সাফল্যের পেছনে থাকে ডিভোর্স অথবা বৈধব্য!’ নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে জোরালো যুক্তি দিয়েছেন। লেখিকার মতে, কত মেয়েকে আপোস করে স্বামীর ঘর করতে হয়। এর কোনও নির্দিষ্ট শ্রেণিবিভাগ নেই। সব শ্রেণির নারীই কমবেশি এই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। তার দ্বিতীয় উদাহরণ পরীমণি।
তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের নায়িকা পরীমণি কিছুদিন আগে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। যেহেতু স্বামী তাঁকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করেন। এই অসুস্থ সম্পর্ক তিনি আর কিছুতেই রাখবেন না। এর পরই, আমার অনুমান, সমাজের চারদিক থেকে তাঁকে আপোস করার জন্য চাপ দেয়া হল।’ সেই আপোসের ফলাফল? পরীমণি বিচ্ছেদের ঘোষণা ফেসবুক থেকে মুছে দিতে বাধ্য হলেন! এবং শরীফুল রাজের সঙ্গেই ফের দাম্পত্য শুরু করলেন।
তসলিমার আফসোস, ‘পরীমণি এখন একা একা মানসিক নির্যাতন সহ্য করবেন। শারীরিক নির্যাতন সহ্য করবেন। এবং রক্তাক্ত হতে থাকবেন ভিতরে-বাইরে। তবু মুখ ফুটে কিছু বলবেন না কাউকে। লক্ষ, কোটি বোবা মেয়ের মতোই হয়ে উঠবেন তিনি। তাঁর স্বামীর সাফল্যের পিছনে থাকবেন তিনি। আর তাঁর সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে কবে তিনি একলা হবেন-- তার।’
তারপরেই বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণের মতো ব্যতিক্রমের কথাও উল্লেখ করেছেন, ‘এর ব্যতিক্রম যে ঘটতে পারে না, তা নয়।’