কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী বিপ্লব চন্দ্র দাস ফের ভর্তি হতে যাচ্ছেন। হত্যা মামলার দায়ে সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে বহিষ্কার করে। হত্যাকাণ্ডের ছয়বছর পর শুক্রবার ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি।
বিপ্লব চন্দ্র দাস মার্কেটিং বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৬ সালের ১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্জলনকে কেন্দ্র করে গোলযোগে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন একই বিভাগের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ। ঘটনার তিনদিন পর বিপ্লবকে রাজধানী থেকে অস্ত্রসহ আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন বিপ্লব চন্দ্র দাস। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে কুবির সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তির চেষ্টা করছেন।
এছাড়া বিপ্লব চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ ২০২২ সালের ১ অক্টোবর তাঁর নেতৃত্বে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ফাঁকাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক হল বন্ধ করে ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন ইস্যুতে আবারও অঘটন ঘটানোর জন্য তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষকদের একটি পক্ষ। এরই ধারাবহিকতায় ক'দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে সরিয়ে অছাত্র বিপ্লবকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপরই বিপ্লব বহিরাগতদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে উপাচার্যের সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। নিজের অবস্থান তৈরি করতে স্থানীয় পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানকেও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
বিপ্লবের ভর্তির বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসাইন সরকার বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরে তার ফলাফল স্থগিত করেছি। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসন থেকে জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত ছাত্রের ভর্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুনরায় নেবে কি না- এমন প্রশ্নে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারব না। প্রশাসনকে জানানো হলে তারা বসে সিদ্ধান্ত নেবে।