আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

প্রতিষ্ঠিত সন্তানেরা ঘরে আর অসুস্থ বাবা পড়ে আছে বাড়ির উঠানে

প্রতিষ্ঠিত সন্তানেরা ঘরে আর  অসুস্থ বাবা পড়ে আছে বাড়ির উঠানে

অসুস্থ বাবাকে বাড়ির উঠানে ফেলে রেখেছে তার সন্তানরা। ঘটনাটি ঘটে লক্ষীপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মেঘনা রোড সংলগ্ন স্বর্প্ন মহলের সামনে। শুক্রবার (৯ জুন) সকাল থেকে সন্তানের ঘরের সামনে বাবা অসুস্থ শফিকুল ইসলামকে (৯৫) পড়ে থাকতে দেখা যায়।

শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মেঘনারোড এলাকার স্বপ্ন মহলে নিজ ঘরের সামনে সন্তানেরা বৃদ্ধ অসুস্থ শফিকুল ইসলাম(৯৫)কে ফেলে রাখে। হৃদয় বিদারক এঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, অসুস্থ শফিকুলের ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে। একছেলে বিজিবিতে কর্মরত, একজন সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত, একজন প্রবাসী, অপর জন বেঁচে নেই। দীর্ঘদিন যাবত তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। গত ২ বছর আগে তিনি সন্তানদের তার সম্পত্তি ভাগ করে দেন। লক্ষ্মীপুর পৌর ১নং ওয়ার্ডে সবারই পাকা বাড়ি রয়েছে। বড় ছেলে মৃত ফেরদৌস আলম সোহাগ তিনি কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। মেজো ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বিজিবিতে কর্মরত, সেজো ছেলে আলমগীর হোসেন প্রবাসী এবং ছোট শাহ আলম বিপু সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত।

সকল ছেলেই প্রতিষ্ঠিত। সবারই বিলাশবহুল বাড়ি রয়েছে। তারপরও অসুস্থ বাবার পরিচর্যা করতে অপারগতা প্রকাশ করে ছেলেরা। তারা তাদের বাড়ির বাহিরে উঠানে ফেলে রাখে অসুস্থ বাবাকে।

বৃদ্ধের নাতি ও সেজো ছেলে আলমগীর হোসেনের সন্তান লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সিয়াম হোসেন জানান, দাদা এক মাস হিসেবে সকল ছেলেদের ঘরেই পালা করে থাকতো। শুক্রবার আমাদের ঘরে একমাস পূর্ন হওয়ায় চাচা শাহ আলম বিপুকে দাদাকে রাখার অনুরোধ করি। কিন্ত তার স্ত্রী অসুস্থ এ অজুহাতে দাদাকে রাখেনি। পরে আমি অন্য চাচাদের ও ফুফুদেরকে বিষয়টি জানাই। কিন্ত কেউই দাদাকে নিতে রাজি হয়নি। পরে দাদাকে ঘরের বাহিরে উঠানে রেখে দিই।

এই ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশাসনকে খবর দিলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থালে যান এবং বিষয়টি বিস্তারিত শুনে ছেলেদেরকে অসুস্থ বাবার দায়িত্ব নিতে বলেন। কিন্তু ছেলেরা কেউ তাদের বাবাকে নিতে রাজি না হওয়ায় অসুস্থ শফিকুলের বড় মেয়ে সুরাইয়া তার বাবাকে তার বাড়িতে নিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল বলেন, বৃদ্ধ লোকটি অসুস্থ হওয়ায় কোন ছেলেই তাকে বাড়িতে রাখতে চাচ্ছে না। তারা তাকে বাড়ির বাহিরে ফেলে রেখেছে। পরে অসুস্থ শফিকুলের এক মেয়ে এসে তাকে নিতে ইচ্ছা পোষন করে। আমরা আমাদের ব্যবস্থাপনায় তাকে তার মেয়ের বাড়িতে দিয়ে এসেছি।

ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল আরও বলেন, সন্তানেরা এত নিষ্ঠুর হয়; কল্পনাও করতে পারিনি। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো। বাবা অসুস্থ বলে কোন সন্তানই বাবাকে ঘরে রাখতে চাইলেন না। সন্তানরা নানা অজুহাত দেখিয়ে বাবাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। পরে বৃদ্ধার এক মেয়ের কাছে পিতার পিতাকে দেখা শুনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন প্রতিষ্ঠিত | সন্তানেরা | ঘরে | আর | | অসুস্থ | বাবা | পড়ে | আছে | বাড়ির | উঠানে