আর্কাইভ থেকে পরামর্শ

হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে না রাখলে যেসব অঙ্গ হারাতে পারেন

হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে না রাখলে যেসব অঙ্গ হারাতে পারেন
হাই ব্লাড প্রেশার একটি মস্ত বড় সমস্যা। এই অসুখটি আপনি এখন ঘরে ঘরে দেখতে পাবেন। অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত। তবুও সচেতনতার অভাব দেখা যায়। রোগীরা প্রেশার মাপেন না। ফলে অসুখ নিয়ন্ত্রণে থাকার কোনও সম্ভবনাও নেই। যদিও মনে রাখবেন, হাই ব্লাড প্রেশার থেকে বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, ভারতের প্রচুর মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। তার থেকে বড় মাথা ব্যথার কারণ হল একটা বিরাট অংশের মানুষ জানেনই না যে তাঁদের রোগটি রয়েছে। কারণ ব্লাড প্রেশারে আক্রান্ত খুব কম সংখ্যকের শরীরে দেখা যায় লক্ষণ। তাই নিয়মিত না মাপলে রোগ অগোচরে রয়ে যায়। তবে সবার আগে জানতে হবে ব্লাড প্রেশার কী? আসলে আমাদের শরীরের রক্তবাহী নালীর ভিতর থেকে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময় যেই চাপ তৈরি হয়, তাই হল ব্লাড প্রেশার। এরপরে মনে অবশ্যই প্রশ্ন আসে, হাই ব্লাড প্রেশার কখন বলা যায়? এই উত্তরটি আমাদের জানালেন, ফর্টিস হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন কনসালটেন্ট বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: জয়দীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, উপরের প্রেশার বা সিস্টোলিক প্রেশার ১৪০-এর উপরে গেলে এবং নীচের প্রেশার বা ডায়াস্টোলিক ৯০-এর উপরে গেলে বলা যায় হাই ব্লাড প্রেশার। তবে একবার মেপেই বলা যাবে না মানুষের প্রেশার আছে। হাই প্রেশারে বলতে গেলে অন্তত ৩ বার মাপতে হয় কিছুদিন পরপর। এদিকে হাই প্রেশার থাকলে এই কয়েকটি অঙ্গের উপর আঘাত আসে। আসুন জানা যাক- কিডনির বিপদ বাড়ে কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এই অঙ্গটি হরমোন তৈরি থেকে, শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়া সহ নানা কাজ করে। তবে দেখা গিয়েছে যে ব্লাড প্রেশার বেশি থাকলে এই অঙ্গের ভিতর থাকা ছোট ছোট রক্তনালীর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা চলতে থাকলে একসময় গিয়ে কিডনি ডিজিজ হয়। এই রোগ খুবই ভয়ঙ্কর। তাই সচেতন হন। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করুন, এমনটাই জানালেন ডা: ঘোষ। হার্টের অসুখ পিছু নেয় ডা: জয়দীপ ঘোষের কথায়, হার্টের রোগের আশঙ্কা এখন কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রচুর মানুষ কম বয়সেই এই অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। হৃৎপিণ্ডের নানা রোগের পিছনে দায়ী ব্লাড প্রেশার। আসলে রক্তচাপ বেশি থাকলে হার্টকে রক্ত পাম্প করতে অনেক বেশি খাটতে হয়। এই কারণে হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যায়। এমনটা আরও কিছুদিন চলতে থাকলে হার্ট ফেল হওয়া সম্ভব। তাই প্রথম থেকেই রোগ নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে হবে। তবেই বাঁচা সম্ভব সুস্থভাবে। দৃষ্টিশক্তি যেতে পারে আমাদের সারা শরীরের মতো চোখেও কিছু রক্তনালী আছে। ব্লাড প্রেশার বেশি থাকলে আপনার চোখেও হতে পারে বিপদ। কারণ এই রক্তনালীগুলির উপর চাপ বাড়ে। তখন সেই জায়গায় রক্তপাত হয়। এই কারণে দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ চলে যেতে পারে। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ আবছা দেখতে থাকেন। তাই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাকে একবারে অবহেলা নয়। বরং নিয়মিত চেক আপ করুন। ওষুধ খান। মস্তিষ্কের সর্বনাশ ডা: ঘোষের মতে, ব্লাড প্রেশার মস্তিষ্কে বিরাট প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে রক্তচাপ বেশি থাকার দরুন মাথার রক্তনালী ফেটে গিয়ে স্ট্রোক হতে পারে। এই সমস্যাকে হেমারেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এই রোগ কিন্তু প্রাণঘাতী। এমনকী প্যারালিসিস হতে পারে অঙ্গের। তখন বেঁচে থাকলেও অনেক জটিলতা আসবে। তাই হাই ব্লাড প্রেশার অসুখটিকে আর অবহেলা করার ভুল করবেন না। বরং রোগ নিয়ন্ত্রণে জোর দিন। তবেই ভালো থাকবেন। রোগ নিয়ন্ত্রণের অ, আ, ক, খ ডা: জয়দীপ ঘোষের মতে, এই কয়েকটি বিষয় মেনে চললেই রোগ বাগে আসে- ১. ওষুধ খান নিয়ম মেনে ২. দুশ্চিন্তা কমান ৩. লবণ কমাতে হবে পাতে ৪. মদ্যপান. ধূমপান নয় একেবারেই ৫. ঘুম চাই পর্যাপ্ত, ৬. যোগা বা ব্যায়াম করুন দিনে ৩০ মিনিট। এছাড়া বয়স ১৮ পেরলেই বছরে ১ বার ব্লাড প্রেশার মাপতেই হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন হাই | ব্লাড | প্রেশার | নিয়ন্ত্রণে | রাখলে | যেসব | অঙ্গ | হারাতে | পারেন