ডলার সংকটে আমদানি বিঘ্ন ঘটায় এবার রমজানের আগেই বেড়ে গেছে ছোলার দাম। মান ভেদে গেল বছর যে ছোলা ছিল ৪৫ থেকে ৭০ টাকা, এবার তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। অনেক আমদানিকারকের অভিযোগ, শিল্পপতিরা সহজে ছোলা আমদানি করতে পারলেও ছোট আমদানিকারকরা ব্যাংকে এলসি খুলতে পারছেন না। এতে এবার ছোলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে করপোরেট কোম্পানিগুলো, রমজানে বাড়বে দাম।
দেশে বছরে ছোলার চাহিদা ২ লাখ ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টন। শুধু রমজানেই চাহিদা এর প্রায় অর্ধেক এক লাখ টন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছোলা আমদানি হয়েছে ৫৩ হাজার টন। তবে, গেলো মাসে ২ লাখ ২৪ হাজার টনের বেশি আমদানির এলসি খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যেই খুচরা বাজারে বেশ খানিকটা বেড়ে গেছে ছোলার দর।
খুচরা বাজারের এক বিক্রেতারা জানান, আগে ছোলার কেজি ৪৫ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে ছিল। এরপর দিনে দিনে ক্রমশ দাম বাড়ছে। গেলো বছর ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। এ বছর এখনই ৯০ টাকা কেজি ছোলা। অথচ রমজানে বাকি আরও এক থেকে দেড় মাস। এর মধ্যে ছোলার দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরাই সারাদেশে ছোলার বড় অংশ সরবরাহ করেন। তবে, এবার বাস্তবতা অন্যান্য বারের চেয়ে একবারেই ভিন্ন বলে অভিযোগ, এখানকার আমদানিকারকদের।
আমদানিকারক মো. শফি বলেন, ডলারের দাম যদি সরকারি ১০৪ টাকা রেটের পরও বাইরে থেকে কিনতে হয় ১০৯ থেকে ১১০ টাকা। তাহলে তো আমার মালের দাম অনেক বেড়ে যাবে। সেই দোটানার কারণে আমরা অনেকেই এলসি করতে পারি নাই। যার জন্য ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের হাতে এবার তেমন পরিমাণ মাল নেই। কিছু বড় ব্যবসায়ীর হাতেই এখন এগুলো আছে।
মৌলভীবাজার ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সংকট যদি সরকার সমাধান না করেন, তাহলে একটা অভাব সৃষ্টি হতে পারে।
তবে, ক্যাবের এই বাজার বিশ্লেষক বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, এবার ছোলার কোনো সংকটই হবে না।
ক্যাবের বাজার বিশ্লেষক কাজী হান্নান বলেন, দেশি ছোলা খেত থেকে উঠে আসার মৌসুমটি পাবে এবারের রমজান। ফলে ছোলার দাম নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই। বরং দেশে উৎপাদিত ছোলার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বিপাকে পড়বেন আমদানিকারকরা।
এদিকে, রমজানে সারাদেশে এক কোটি মানুষের কাছে কম দামে ছোলা বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
টিসিবি মুখপাত্র হুমায়ূন কবির বলেন, গেলো মাসেই ছোলা চলে এসেছে। আজকেও কোনো কোনো জায়গায় ছোলাটা আনলোড করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ছোলা পাইপলাইনে আছে। সেটি আমরা যথাসময়ে গুদামজাত করে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাজারে ছোলা ছেড়ে দেব।