আর্কাইভ থেকে ফুটবল

আর্জেন্টিনা-বাংলাদেশ বন্ধুত্বে বাণিজ্যের নতুন পথ

আর্জেন্টিনা-বাংলাদেশ বন্ধুত্বে বাণিজ্যের নতুন পথ
ফুটবল দুটি দেশের ভৌগলিক দূরত্ব কিভাবে কমিয়ে দিতে পারে তাঁর বড় উদাহরণ বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার সম্পর্ক। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছর পরেই এ দেশে দূতাবাস খুলেছিল ল্যাতিন আমেরিকার দেশটি। কিন্তু সামরিক জান্তার শাসনামলে ১৯৭৮ সালে দূতাবাসে তালা ঝুলিয়ে দেয় তাঁরা। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ৪৫ বছর। তবে সাম্প্রতিক ফুটবল বিশ্বকাপে মেসির সমর্থনে বাংলাদেশের মানুষের গলা ফাটানোল চিৎকার পৌঁছে যায় আর্জেন্টিনায়।। বিষয়টি নজর এড়ায়নি ৩৬ বছরের অবসান ঘটিয়ে কাতার বিশ্বকাপ ঘরে তোলা লিওনেল মেসিদেরও। ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে গত মাসের ২৭ তারিখ ঢাকায় ফের দূতাবাস চালু করেছে আর্জেন্টিনা। ফলে নতুন সম্ভাবনা পথ উম্মুক্ত হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যতেও। যদিও ঢাকায় দূতাবাস না থাকলেও আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য থেমে ছিল না। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের আর্থিক পরিমাণ ৯০ কোটি ডলারেরও কম। তবে দূতাবাস চালু হওয়ার পরে আগামী দুই বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ থেকে ১৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুই দেশের বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ ৮০ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আর্জেন্টিনায় ৯৫ লাখ ২০ ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে আমদানি করেছে ৭৯ কোটি ১৫ লাখ ডলারের পণ্য। আর্জেন্টিনা থেকে প্রধানত সয়াবিন তেল ও চিনি আমদানি করে বাংলাদেশ। তবে লাতিন আমেরিকার দেশটি থেকে সূর্যমুখী তেল, গম, অ্যানিমেল ভেজিটেবল ফ্যাটস অ্যান্ড অয়েল, তৈলবীজ, ফলমূল, দুগ্ধজাত পণ্য, প্রাকৃতিক মধুও আমদানি করা যেতে পারে। বিপরীতে, বাংলাদেশ থেকে আর্জেন্টিনায় রপ্তানি হয় খুব সামান্যই। সাম্প্রতিক সুসম্পর্কের জেরে আর্জেন্টিনায় তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর বড় সুযোগ সামনে এসেছে বাংলাদেশের। এ বিষয়ে আগ্রহও দেখিয়েছেন আর্জেন্টিনার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চায়। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে উচ্চমানের ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে পারে আর্জেন্টিনা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ওইসি ওয়ার্ল্ডের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি (৬৫ শতাংশ) সয়াবিন রপ্তানি করে আর্জেন্টিনা। এরপর রয়েছে গম ও ভুট্টা। এছাড়া হিমায়িত মাংস, সোনা, অ্যালুমিনিয়াম, ডেলিভারি ট্রাক, মোটর যন্ত্রাংশের মতো পণ্যও রপ্তানি করে তারা। আর্জেন্টিনা সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি করে প্রতিবেশী দেশ ব্রাজিলে। এরপর রয়েছে চীন, ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, থাইল্যান্ড প্রভৃতি। অর্থাৎ এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে আর্জেন্টিনার রপ্তানি বাণিজ্য বেশ শক্তিশালী।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আর্জেন্টিনাবাংলাদেশ | বন্ধুত্বে | বাণিজ্যের | নতুন | পথ