আন্তর্জাতিক
জাতিসংঘের এজেন্ডায় একাত্তরে গণহত্যার স্বীকৃতি
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের আগামী অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে জায়গা পেয়েছে একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা সংঘটিত নৃশংস গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি।
আগামী ১৯ জুন থেকে ১৪ জুলাই মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনের আলোচ্যসূচির তিন নম্বরে রয়েছে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) বিশেষ পরামর্শকের মর্যাদা পাওয়া বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি সন্তানদের সংগঠন ‘স্টিচিং বাসুগ’ নামে বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ-এর সাথে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা আমরা একাত্তর, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১, ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরাম (ইবিএফ) এবং সিরাজি ফাউন্ডেশন একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল।
গেলো সোমবার (২৯ মে) জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর পাঠানো চিঠিটি গ্রহণ করেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব চিঠিটি পেয়েছেন, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের রেজ্যুলেশন ১৯৬৩/৩১ অনুযায়ী প্রচার করা হলো।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের চালানো বাঙালির ওপর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবির বিষয়টি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের আগামী অধিবেশনে আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। আগামী ১৯ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিটি এই অধিবেশনের আলোচ্যসূচির ৩ নম্বরে রয়েছে। অধিবেশনে সব ধরনের মানবাধিকার, নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে।
২৯ মে’র ওই বিবৃতির সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে পাঠানো বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর চিঠিটি সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের গণহত্যা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত এক অভিযান ছিল। বাংলাদেশে বিহারি ও বাঙালি সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এই নৃশংস পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, একাত্তরে ৩০ লাখের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা। এছাড়া দুই লাখেরও বেশি নারী ধর্ষণ ও শারীরিক নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটিরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি ছেড়ে কেবল জীবন বাঁচানোর তাগিদে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। আর অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন ২ কোটির বেশি মানুষ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গ্রন্থাগার ও আর্কাইভে পাওয়া খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন এবং প্রকাশনাগুলো এই সত্যের সাক্ষ্য বহন করে। একাত্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় মুক্তিকামী বাঙালির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সিনেটর এডওয়ার্ড টেড কেনেডি।
তিনি বাংলাদেশে আসতে চাইলেও পাকিস্তান সরকারের বাধায় তা ভেস্তে যায়। পরে ভারতে পৌঁছে বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ঘুরে মানুষের দুর্দশা, পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম হত্যাযজ্ঞের বিবরণ শুনেছিলেন তিনি। ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব পরিমণ্ডলে মতামত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
জাতিসংঘের কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশি সংগঠনগুলো বলেছে, সিনেটর এডওয়ার্ড টেড কেনেডির ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন, তথ্য অনুসন্ধানের জন্য তাকে বাংলাদেশে প্রবেশে পাকিস্তানের বাধা এবং তার পরবর্তী বক্তৃতা, আলোচনা ও মার্কিন সিনেটে উপস্থাপিত প্রতিবেদন পাকিস্তানের নৃশংসতার যথেষ্ট প্রমাণ।
বাংলাদেশে সংঘটিত নৃশংসতার ঘটনা তদন্তে ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের অসহযোগিতার কারণে এই কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে পারেনি। পরে ১৯৭২ সালে তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত আইনি বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হয়।
ঢাকায় তৎকালীন মার্কিন মিশনের চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদন ও যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থা অক্সফামের সংকলিত নথিও গণহত্যার ঘটনার প্রমাণ বলে সংগঠনগুলো চিঠিতে উল্লেখ করেছে।
গেলো চার দশকে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যায় যুক্ত পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের বিচার চেয়ে বেশ কয়েকবার আবেদন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের অসহযোগিতার কারণে সেসব উদ্যোগ সফল হয়নি।
ইউরোপ
যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।ফলে এই চুক্তির আওতায় রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখান হওয়া ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।
গেলো বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর দেশটির ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে। গেলো বছর প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী বা ভিজিটর ভিসায় ব্রিটেনে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেছেন। মূলত ব্রিটেনে প্রবেশের ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে কাজে লাগানোর প্রয়াসে এসব ভিসা ব্যবহার করেছেন তারা দেশটিতে প্রবেশ করেছেন। শুধুমাত্র স্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার উদ্দেশ্যে তাঁরা এসব করছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তবে দেশটিতে বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয় আবেদনের মাত্র ৫ শতাংশই সফল হয়েছে। অর্থাৎ ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে।
যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন জানান, চুক্তির অধীনে কেবল ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীরাই নয়, বিদেশি নাগরিকদের যারা অপরাধী এবং যেসব ব্যক্তি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশের পর বাড়তি সময় অতিবাহিত করেছেন তাদেরও নির্বাসনের কাজ সহজতর হবে।
প্রসঙ্গত, এ সপ্তাহে লন্ডনে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় পক্ষ রিটার্ন চুক্তিটিতে সম্মত হয়।
আই/এ
এশিয়া
ভারতীয় মশলা বিক্রি নিষিদ্ধ করলো নেপাল
ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেসের গুঁড়া মশলায় উচ্চ মাত্রার ইথিলিন অক্সাইড থাকায় এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা আমদানি ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নেপাল। এর আগে ক্যান্সার সৃষ্টির উপাদান ও ইথিলিন অক্সাইড থাকায় একই সিদ্ধান্ত নেয় হংকং ও সিঙ্গাপুর।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এভারেস্ট এবং এমডিএইচ-এর মশলা আমদানি, ব্যবহার এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে নেপালের খাদ্য প্রযুক্তি ও গুণমান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ। ভারতীয় এই দুই কোম্পানির মশলায় ক্যানসার-সৃষ্টিকারী উপাদান ইথিলিন অক্সাইডের মাত্রার স্তরও নেপাল পরীক্ষা করছে বলে দেশটির এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
নেপালের খাদ্য প্রযুক্তি ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের মুখপাত্র মোহন কৃষ্ণ মহারজান জানান, মূলত এই দুটি ব্র্যান্ডের পণ্যগুলোতে উচ্চ মাত্রার ইথিলিন অক্সাইড পাওয়ার খবরে নেপাল এটিকে নিষিদ্ধ করে। এক সপ্তাহ আগেই আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল এবং এখন বাজারে এই মশলার বিক্রিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ দুটি বিশেষ ব্র্যান্ডের মশলায় রাসায়নিকের উপস্থিতি কতটা তা জানতে পরীক্ষা চলছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। হংকং এবং সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যেই এটি নিষিদ্ধ করেছে, তাদের পদক্ষেপের পর এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতে এই দুই কোম্পানির গুঁড়া মশলা ব্যাপক জনপ্রিয় এবং ইউরোপ,এশিয়া ও উত্তর আমেরিকাতেও রপ্তানি করা হয়। ভারতের মশলার বাজারের অন্যতম বৃহৎ দুই কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেস।
আই/এ
এশিয়া
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় আরও ৩৯ জন নিহত
ফিলিস্তিনের গাজায় থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা। ইসরায়েলের হাময়ায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গেলো ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩৫ হাজার ৩৫২৭২ জনে।
গেলো বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গেলো ২৪ ঘণ্টায় গাজায় পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েল চারটি ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে এবং এতে অন্তত ৩৯ জন নিহত ও আরও ৬৪ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গেলো ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৭৯ হাজার ২০৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
আই/এ
- আইন-বিচার4 days ago
৫ ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
- এশিয়া7 days ago
দুর্ঘটনায় উল্টে গেলো গাড়ি, রাস্তায় ছড়িয়ে পড়লো কোটি কোটি টাকা
- টুকিটাকি7 days ago
মাকে গুলি, স্ত্রীকে হাতুড়ি আর ৩ সন্তানকে ছাদ থেকে ফেলে খুন
- বলিউড7 days ago
আরবাজ-সোহেলের পর বিয়ে ভাঙছে সালমানের বোন অর্পিতার?
- ক্রিকেট2 days ago
যে বোলারকে খেলতে সবচেয়ে কঠিন লাগতো রোহিতের
- অপরাধ4 days ago
অনলাইনে পাকিস্তানি ড্রেস দেখায়, ডেলিভারি দেয় দেশি ড্রেস
- খুলনা4 days ago
এসএসসি পাশের আনন্দ কেড়ে নিলো ট্রাক
- টুকিটাকি4 days ago
চলন্ত বাইকেই রোম্যান্সে মত্ত প্রেমিক-প্রেমিকা!
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন