আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ভূমধ্যসাগর থেকে বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ১৩

ভূমধ্যসাগর থেকে বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ১৩
লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ট্রলারডুবির ঘটনায় নরসিংদী রায়পুরার আব্দুল নবী (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ট্রলারে থাকা নরসিংদীর বেলাব ও কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ১৩ জন যুবক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। আব্দুল নবীর মৃত্যুর সংবাদটি শুক্রবার (২৩ জুন) গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন তার ভাই মাহে আলম। নিহত আব্দুল উপজেলার উত্তর বাখর নগর ইউনিয়নের পুরান বড়চর এলাকার মৃত হযরত আলীর ছেলে। নিখোঁজ অন্যরা হলেন বেলাব উপজেলার নারাণপুর ইউনিয়নের টান লক্ষ্মীপুর এলাকার বিল্লাল মিয়ার ছেলে সৈকত (২০), রহিম মিয়ার ছেলে আবু তাহের (২৭), ওবাইদুল্লাহর ছেলে রহমত উল্লাহ (২০), একই ইউনিয়নের চর লক্ষ্মীপুর এলাকার রতন মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম (১৯), আউয়াল মিয়ার ছেলে উজ্জল (২০), মোক্তার হোসেনের ছেলে জিহাদ (১৯) ও কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি এলাকার বাছেদ মিয়ার ছেলে স্বপন (২৭)। নিখোঁজ অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি। জানা গেছে, বেলাব উপজেলা নারাণপুর টান লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা লিবিয়া প্রবাসী আলম মিয়া সাথে জনপ্রতি আট লাখ টাকার চুক্তিতে আব্দুল নবীসহ ১৪ জন যুবক চার মাস আগে অবৈধ পন্থায় বিদেশ পাড়ি দেন। তিন মাস লিবিয়ায় অবস্থান করেন তারা। পরে গেলো ২৩ মে রাতে লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এতে নিহত আব্দুল নবীর লাশ সাগরের তীরে ভেসে আসলে ওই দেশের কোস্টগার্ড উদ্ধার করে। বাকি ১৩ যুবক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। নিহত আব্দুল ছিলেন আট ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। এর আগে তিনি পাঁচ বছর সৌদিতে ছিলেন। দেশে ফিরে দালাল আলমের সঙ্গে তার কথা হয়। দালাল তাকে কম টাকায় ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। পরে তার কাছ থেকে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওই দালাল বলে দাবি করেন নিহতের ভাই মাহে আলম। মাহে আলম বলেন, 'লিবিয়া প্রবাসী আলম একজন চিহ্নিত মানবপাচারকারী। তিনি অবৈধভাবে ইতালিতে লোক পাঠিয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।' আলমকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিহত ছেলের রুমের খাটে বসে শোকে বিলাপ করছেন মা পরিষ্কার বেগম। এ সময় বারবার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দেওয়ার আকুতি জানান তিনি। এদিকে বেলাব উপজেলার টান লক্ষ্মীপুর গ্রামে আলম দালালের বাড়িতে নিখোঁজ ১৩ যুবকের স্বজনরা ভিড় করেন। তাদের একজন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার বাছেদ মিয়া। তিনি বলেন, 'এক মাস আগে শেষ কথা হয় ছেলে স্বপনের সঙ্গে। এরপর থেকে ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।' নিখোঁজ রহমত উল্লাহর মা খালেদা ছেলের সন্ধানে আলম দালালের বাড়িতে বসে কান্না করছিলেন। বেলাব উপজেলার দুই গ্রামের ছয় যুবক ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ হন। এ ব্যাপারে জানতে জানতে চাইলে আলম দালালের পরিবারের কেউ গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। রায়পুরা থানার ওসি আজিজুর রহমান ও বেলাব থানার ওসি ভানভীর আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ দেননি। তবে এ বিষয়ে জানতে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ভূমধ্যসাগর | বাংলাদেশি | যুবকের | মরদেহ | উদ্ধার | নিখোঁজ | ১৩