আর্কাইভ থেকে রাজনীতি

'ওলামা লীগের ঘোষিত কমিটি জামায়াত-বিএনপির খেলাঘর'

'ওলামা লীগের ঘোষিত কমিটি জামায়াত-বিএনপির খেলাঘর'
ওলামা লীগের ২৮ সদস্য বিশিষ্ট ঘোষিত কমিটিকে জামায়াত-বিএনপির খেলাঘর বলে আখ্যায়িত করেছেন সংগঠনটির নেতা মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী। গত ১৫ জুন রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওলামা লীগের একাংশ সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী ব্রিফিং করেন। এ সময় ওলামা লীগের একাংশের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাতের আঁধারে ঘোষিত এই কমিটি জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন কমিটি। এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক কোন মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছেন, কোন যোগ্যতা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক বানানো হলো, এর রহস্য কী? তিনি বলেন, যাদের সমন্বয়ে সম্মেলন হয়েছে তাদের মধ্য থেকে কাউকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করতে হবে। যারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ওলামা লীগের সম্মেলনে কাজ করেছেন তাদের মধ্য থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করতে হবে। সেটা যে কেউ হোক না কেন। রাতের আঁধারে যে ২৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেছে আমরা তাদেরকে চিনি না। এই কমিটি আমাদের জন্য আত্মঘাতী। মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, গত ১৫ তারিখ গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি কমিটি প্রকাশিত হয়েছে। আমরা সেই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০ মে। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী ওলামা লীগের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ। আওয়ামী ওলামা লীগ ১৯৯৪ সাল থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার মৌখিক স্বীকৃতি মাধ্যমে রাজপথে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের দলীয় স্বীকৃতির প্রত্যাশায় সকল অংশ একত্রিত হয়ে একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করেছে। ওই কমিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে অনুমোদন করেছেন ওবায়দুল কাদের ও আব্দুস সোবহান গোলাপ। সেই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন কেএম আব্দুল মমিন সিরাজী। সদস্য সচিব ছিলেন দেলোয়ার হোসাইন। তিনি বলেন, আমরা যারা প্রার্থী ছিলাম তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাকে দেখলাম তিনি প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ছিলেন না। তিনি ওলামা লীগের কোনো রাজনীতিতে ছিলেন না। তাকে আমরা চিনতাম না। আমাদের যে রেজুলেশন আছে সেখানে উল্লেখ আছে ওলামা লীগের প্রস্তুতি আহ্বায়ক কমিটির ব্যতীত কেউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে পারবে না। কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, এ ঘটনার জন্য আব্দুস সোবহান গোলাপ দায়ী। গেলো ১৪ তারিখ তাকে বলেছিলাম, আমিনুলকে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক করা হলে সেই কমিটি প্রত্যাখ্যান করব। তাদের (আব্দুস সোবহান গোলাপ) বিভিন্ন তৎপরতায় বুঝেছিলাম যে তাকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ কর্তৃক স্বীকৃত ওলামা লীগের কমিটি চেয়েছিলাম। কিন্তু এই কমিটির মাধ্যমে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কমিটির যেসব নতুন মুখ রয়েছে তারা কারা? তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ই বা কি তাও অজানা। সুতরাং সাধারণ সম্পাদকসহ যারা রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হোক। আমরা বিশেষ সূত্রে জানতে পারলাম সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক যারা প্রার্থী ছিল তাদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করেছে। তদন্ত রিপোর্ট পাশ কাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে তড়িঘড়ি করে হঠাৎ রাতে আঁধারে কমিটি প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নীলনকশার বিতর্কিত এই কমিটি বাতিলের জোর দাবি করছি। রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি চাই। ওলামা লীগের সিনিয়র নেতা মুফতি মিজানুর রহমান মিজানীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাফেজ মাওলানা সোলায়মান কিশোরগঞ্জী, হাফেজ হাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান মিজানী, হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, মুফতি মাসুম বিল্লাহ, মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা সাইফুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস আলম আল কাদেরী, হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন জুয়েল, মুফতি মাওলানা মো. হাসানুজ্জামান চিশতী, মাওলানা সৈয়দ ইকবাল আহমেদ আজহারী, আব্দুল হালিম খন্দকার, মো. কায়সার-ই-আযম রানু, হাফেজ মাওলানা ইব্রাহিম, মাওলানা শওকত হোসেন সেলিমপুরী, মো. আব্দুস সবুর প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ওলামা | লীগের | ঘোষিত | কমিটি | জামায়াতবিএনপির | খেলাঘর