অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার একটি চালান আটকে দিয়েছে ইতালি সরকার। এই চালানের মাধ্যমে ইতালিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার উৎপাদিত টিকার আড়াই লাখ ডোজ অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানির কথা ছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, করোনাভাইরাসে অধিক ঝুঁকিতে থাকা দেশের তালিকায় নেই অস্ট্রেলিয়া। এর সঙ্গে ইউরোপজুড়ে ভ্যাকসিন স্বল্পতার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে দাবি করেছে ইতালি।
ইতালির এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন নিয়ম অনুযায়ী টিকা সরবরাহকারী কোনো কোম্পানি ইইউর বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট দেশে টিকার রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারবে। অস্ট্রেলিয়ায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধের মাধ্যমে সর্বপ্রথম নিয়মটি প্রয়োগ করল ইতালি।
করোনার ভ্যাকসিন কার্যক্রম এখনো আশানুরূপ নয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ সদস্য দেশেই। এর জন্য টিকা সরবরাহের ঘাটতিকে অভিযুক্ত করে আসছে সংস্থাটি। শুরু থেকেই টিকা উৎপাদন ও রপ্তানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ইইউ। সেই ধারাবাহিকতায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার আড়াই লাখ ডোজ অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো আটকে দিলো ইইউয়ের সদস্য দেশ ইতালি।
এদিকে, একটি চালান বন্ধ করায় টিকাদান কর্মসূচিতে খারাপ কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ইইউভুক্ত দেশগুলোকে রপ্তানি চুক্তির মাত্র ৪০ শতাংশ সরবরাহের পথে রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। সরবরাহ ঘাটতির জন্য উৎপাদনজনিত সমস্যার কথা বলছে প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের করোনার টিকা সরবরাহে দেরি হওয়াকে অপ্রত্যাশিত মন্তব্য করেছিলেন ইতালির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতে। ওই সময় কোম্পানি দুটির বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তোলেন তিনি।
করোনার টিকাদান কর্মসূচির মন্থর গতির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে ইইউ। গেল জুনে গঠিত ইইউ ভ্যাকসিন স্কিমের আওতায় ইইউ সদস্য দেশগুলোর হয়ে টিকা কেনার বিষয়ে আলোচনা করেছিল ইউরোপিয়ান কমিশন।
এদিকে, ইতালির টিকা রপ্তানি আটকে দেওয়ার ঘটনায় আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি ইইউ বা অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
গেল সপ্তাহে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনার টিকা দিয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। আজ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যুক্ত হওয়ার কথা ছিল দেশটির টিকা কার্যক্রমে।
এসএন
