বলিউডে ডিস্কো মিউজিক মানেই বাপ্পি লাহিড়ি। বলিউডের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে আজ।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মুম্বাইয়ের জুহুতে অবস্থিত পবনহংস মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য হওয়ার হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাস করেন বাপ্পি লাহিড়ীর ছেলে বাপ্পা লাহিড়ি। বাবার মৃত্যু খবর পেয়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তিনি এলেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
৬৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জনপ্রিয় এই সংগীত শিল্পী। গেলো বছর এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।
গেলো মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে তিনি সবাইকে ছেড়ে চলে যান অপারে।
১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ি। হিন্দিতে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় অমর সঙ্গী, আশা ও ভালোবাসা, আমার তুমি, অমর প্রেম প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তার শেষ গান ‘বাগি-৩’ এর জন্য। কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির সম্পর্কে মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরি লাহিড়ি— দু’জনেই সংগীতজগতের মানুষ। ফলে একমাত্র সন্তান বাপ্পি ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা-বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাপ্পি। তারপর দীর্ঘদিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন, সুর দিয়েছেন। প্রচুর স্বর্ণের গয়না পরতে ভালোবাসতেন। ছিল গায়কির নিজস্ব কায়দা, যা তাকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল।
বাপ্পি লাহিড়ি ১৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ে স্থানান্তরিত হন। ১৯৭৩ সালে হিন্দী ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারী ছবিতে তিনি প্রথম সংগীত রচনা করেন। এরপর তাহির হুসেনের জখমি (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এতে তিনি গান রচনাসহ গায়কের দ্বৈত ভূমিকায় অংশ নেন। অসম্ভব কিছু নয় শিরোনামে মোহাম্মদ রফি এবং কিশোর কুমারের সঙ্গেও দ্বৈত সঙ্গীতে অংশ নেন। তারপরের চলচ্চিত্র হিসেবে চালতে চালতে ছবিটির গানও দর্শক-শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। রবিকান্ত নাগাইচের সুরক্ষা ছবিতে গান গেয়ে সঙ্গীতকার হিসেবে জনপ্রিয়তা পান।
তাসনিয়া রহমান